কলেজের অশিক্ষক কর্মচারী পদে তৃণমূল বিধায়কের পুত্রকে নিয়োগের প্রতিবাদে পথে নামল বিজেপি ও ডিওয়াইএফআই। নিয়োগ বাতিলের দাবিতে শুক্রবার আধঘণ্টা ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। পরে কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখায় সিপিএম-এর যুব সংগঠন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন বিজেপির কর্মীরা জটেশ্বরেও বিক্ষোভ দেখান।
ফালাকাটা ব্লকের জটেশ্বর গ্রামের লীলাবতী কলেজের অশিক্ষক পদে সম্প্রতি তিন জন নিয়োগ পত্র পান। তাঁদের মধ্যে একজন ফালাকাটার তৃণমূল বিধায়ক তথা ওই কলেজের সভাপতি অনিল অধিকারীর ছেলে জয়ন্ত। কলেজের সম্পাদক তথা ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সমরেশ পালের এক ভাগ্নেও নিয়োগপত্র পেয়েছেন। চাকরিপ্রাপকদের তালিকায় নাম রয়েছে এক তৃণমূল কর্মীরও। এই ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরেই ক্ষোভ দেখা দেয়। খবর প্রকাশের পর থেকে নানা মহলে শোরগোল পড়ে যায়।
বিজেপি-রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেছেন, “ওই ঘটনার কথা আমরা মানুষকে জানাব। তৃণমূল যে ভাবে স্বজনপোষণ করে ও বেআইনি ভাবে নিজেদের লোকজনকে চাকরি পাইয়ে দিচ্ছে তা মানা যায় না।”
আলিপুরদুয়ার জেলা সিপিএম-এর সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ “নিয়োগ নিয়ে নানা জায়গায় দুর্নীতি করছে তৃণমূল। এরই প্রতিবাদে আমাদের যুব সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যাবে।” বিরোধীদের অভিযোগ, জটেশ্বর কলেজে কর্মী নিয়োগের পরীক্ষাতে কোনও রকম নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। ৩৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে কী ভাবে বেছে বেছে বিধায়ক পুত্র, সহ সম্পাদকের ছেলে সহ কলেজের অপর এক অস্থায়ী কর্মী তথা তৃণমূল কর্মী পাশ করে চাকরি পেল সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। অবশ্য স্বচ্ছতা বজায় রেখেই পরীক্ষা হয়েছে বলে দাবি করেছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ নাগ ও কমিটির সম্পাদক সমরেশবাবু। কোন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে অবশ্য দু’জনের বক্তব্য ভিন্ন।
ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দাবি, “আমরা প্রশ্নপত্র তৈরি থেকে পরীক্ষা নেওয়া বা উত্তরপত্র দেখার কোন দায়িত্বে ছিলাম না। উত্তরবঙ্গ বিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সদস্য তথা পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার দেবকুমার মুখোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে সব কিছু হয়েছে। তাঁর প্রতিনিধিরা সমস্ত ব্যবস্থা পরিচালনা করেছেন।”
জটেশ্বর কলেজের পরিচালন কমিটির সম্পাদক সমরেশ পাল প্রথমে একই কথা বললেও পরে তিনি দাবি করেছেন, “আসলে দেবকুমার বাবুর কাছে পরীক্ষার স্বচ্ছতার বিষয়ে পরামর্শ নেওয়া হয়েছে মাত্র। তিনি পরীক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে ছিলেন না। আমরা অন্য একটি কলেজের অধ্যক্ষের তত্ত্বাবধানে লিখিত পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলাম।’’
দেবকুমার বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “কী পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হবে সে পরামর্শ টুকু আমি দিয়েছি মাত্র। কারা প্রশ্ন পত্র তৈরি করেছেন বা খাতা দেখেছেন, সেটা তাঁরাই জানেন।”