শহরের দুটি স্কুলে শনিবার প্রকাশ্যেই বিবাদে জড়ালেন শিক্ষকরা। এদিন স্কুল চলাকালীন ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশনে কয়েকজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন ওই স্কুলের গ্রন্থাগারিক জয়দেব দেবশর্মা। তাঁকে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ে এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকার আনা অভিযোগের তদন্ত করতে স্কুলে যায় পুলিশ।
সেপ্টেম্বর মাসে শহরের আনন্দ চন্দ্র কলেজে বিজ্ঞান প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়ার কথা ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশনের ছাত্রদের। এই সায়েন্স সেমিনারে কেন শিক্ষকদের সঙ্গে গ্রন্থাগারিককেও পাঠানো হচ্ছে তাই নিয়ে প্রশ্ন তোলেন স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক। বাধে হাতাহাতি। গ্রন্থাগারিক জয়দেব দেববর্মার বুকে আঘাত লাগে বলে অভিযোগ। স্কুলের সহকারি প্রধান শিক্ষক ধীরেন গঙ্গোপাধ্যায় জানান, “কেন গ্রন্থাগারিককে প্রদর্শনীতে পাঠানো হবে, তাই নিয়েই বিবাদ শুরু হয়। এর থেকেই হাতাহাতি। এর পরে কী হয়েছে বলতে পারব না। তবে যা হয়েছে সেটা খুবই লজ্জার। ঘটনার পরে জখম গ্রন্থাগারিক কোতোয়ালি থানায় তিনজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ দায়ের করেন।” জয়দেববাবুর বন্ধু জলপাইগুড়ি হাইস্কুলের শিক্ষক প্রতিভাস বসু বলেন, “উনি অসুস্থ বোধ করায় ফোন করেন।” ঘটনার খবর পেয়ে স্কুল পরিচালন সমিতি সোমবার আলোচনায় বসার প্রস্তুতি নিয়েছে। পরিচালন সমিতির সম্পাদক চিকিৎসক স্বস্তিশোভন চক্রবর্তী বলেন, “খুবই খারাপ ঘটনা। কিছু একটা ব্যবস্থা নিতে হবে। সোমবার স্কুল খোলার পরে আলোচনায় বসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে থানায় অভব্য আচরণের অভিযোগ দায়ের করেন প্রধান শিক্ষিকা। অভিযোগের তদন্ত করতে পুলিশ স্কুলে গেলে অন্য শিক্ষিকাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে। বিকেলে কোতোয়ালি থানায় গিয়ে শিক্ষিকারা জানতে চান কেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তাঁরা পুলিশের কাছে একটি অভিযোগপত্র জমা দেন। তাঁরা জানান, ওই ঘটনায় শিক্ষিকারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। জেলাশাসককেও বিষয়টা জানানো হয়েছে। জেলাশাসক তথা রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির সভাপতি পৃথা সরকার বলেন, “আমার তো কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।” কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় জানান, এক শিক্ষিকার বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষিকার জানানো অভব্য আচরণের অভিযোগের তদন্ত করতে এদিন পুলিশ স্কুলে যায়। শিক্ষিকারা জানান, কোনও ঘটনা ঘটেনি। শিক্ষিকাদের বিক্ষোভের কথাও পুলিশ অস্বীকার করেছে। রাষ্ট্রীয় বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সাগরিকা দত্ত জানান, স্কুলের এক শিক্ষিকা তাঁর সঙ্গে অভব্য আচরণ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ায় গত ৩০ এপ্রিল তিনি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশ ঘটনার তদন্তের জন্য শনিবার স্কুলে যায়।