জলদাপাড়ার বন বাংলোয় অগ্নিসংযোগ ও রেঞ্জ অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত সোমবার রাতে আলিপুরদুয়ার থানার শালকুমারহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতর নতুনপাড়া ও জলদাপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই তিন জনকে ধরে পুলিশ। ধৃতদের নিজেদের সমর্থক বলে দাবি করেছে তৃণমূল। দলের নেতাদের দাবি, অভিযুক্ত কংগ্রেস সমর্থকদের বাঁচাতে আলিপুরদুয়ারের বিধায়কের সঙ্গে বন দফতরের একাংশ অফিসারের যোগসাজশে দলীয় সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়। আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।
মঙ্গলবার ধৃতদের আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী মহম্মদ রফি জানান, বিচারক শুভদীপ চৌধুরী ধৃত তিন জনের জামিন নামঞ্জুর করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আলিপুরদুয়ার থানার আইসি দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, গত মার্চ মাসে জলদাপাড়ায় একটি বন বাংলো আগুন লাগানো সঙ্গে কয়েকটি বন দফতরের অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। মোট ১৭ জনের নামে অভিযোগ জানায় বন দফতর। গত সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে নতুনপাড়া এলাকা থেকে সন্দীপ চম্প্রামারি, ভীম ছেত্রী এবং জলদাপাড়া বেতাব সুব্বাকে গ্রেফতার করা হয়। তদন্ত চলছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলবে। ধৃতেরা অবশ্য তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, “আমরা ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নই। আমাদের ফাঁসানো হয়েছে।”
এই গ্রেফতারির ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রঙও। শালকুমার-১ পঞ্চায়েত এলাকার তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি অজয়কৃষ্ণ রায়ের অভিযোগ, “ধৃতেরা সকলেই আমাদের সমর্থক। আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেসের বিধায়ক ও বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশের সঙ্গে যোগসাজশ রয়েছে। ওই অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের ঘটনায় কংগ্রেস সমর্থকেরাই সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন। প্রয়োজনে আমাদের আন্দোলনে নামতে হবে।”
অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায় বলেন, “তৃণমূল মিথ্যা অভিযোগ করছে। ঘটনার পরে এলাকায় সর্বদল বৈঠক হয়। সেখানে গোলমাল যাঁকে ঘিরে, সেই জলদাপাড়ার জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে যাতায়াতের বিষয়টি আলোচনা হয়। অজয়বাবুও সেখানে ছিলেন। সবাই ঘটনার নিন্দা করেন। তার আগেই বন দফতর থানায় অভিযুক্তদের নামে অভিযোগ জানিয়ে দিয়েছিল। তখন কেউ কিছু বলেননি। এখন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নানা কথা বলা হচ্ছে।”
জলদাপাড়া পূর্ব ও পশ্চিম রেঞ্জের জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে মাদারিহাট এলাকায় জঙ্গল-পথ ধরে যাতায়াত নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে বনবিভাগের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিবাদ চলছিল। ওই জঙ্গল-পথে যাতায়াতে বন দফতর কিছু বিধি আরোপ করায় তা নিয়ে গোলমাল বেড়ে যায়। গত ১৯ মার্চ উত্তেজিত জনতা পুলিশের সামনেই বন বাংলোয় আগুন ধরিয়ে দেয়। রেঞ্জ অফিস ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।