কমলালেবু থেকে মুসাম্বি, রসুন থেকে বাহারি ফুল। সমতলের কৃষকদেরও পাহাড়ি নানা ফল, ফুল ও সব্জিচাষের সাফল্যের শরিক করতে উদ্যোগী হল কৃষি দফতর। বুধবার কোচবিহার ১ ও ২ ব্লকের ৩২ জন আগ্রহী কৃষককে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে নিয়ে যাওয়া হল পাহাড়ে।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, প্রথম দু’দিন কালিম্পং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রে ওই কৃষকরা পাহাড়ি চাষের নানা খুঁটিনাটি সরেজমিনে ঘুরে দেখবেন। সেই সঙ্গে কোচবিহারে কোন ফুল-ফলের চাষ করা সম্ভব হবে তাও তাঁদের জানানো হবে। তারপরে সিকিমের গ্যাংটকে যাবে ওই দলটি। গ্যাংটকের একটি কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৯ নভেম্বর তাঁদের ফিরে আসার কথা। কোচবিহারের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য কৃষি আধিকারিক নির্মল বর্মা বলেন, “পাহাড়ি এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কমলালেবু, মুসাম্বি, মাশরুম চাষের পদ্ধতি এবং নার্সারি সরাসরি দেখার সুযোগ করে দিতেই এই উদ্যোগ। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্যান্য ব্লকের আগ্রহী কৃষকদেরও পাহাড়ে পাঠানো হবে।”
২০১৩ সাল থেকে কোচবিহারে চালু রয়েছে এগ্রিকালচারাল টেকনোলজি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (আতমা) প্রকল্প। সেখানে ভিন্ জেলার চাষ নিয়ে কৃষকদের উত্সাহ বাড়াতে জোর দেওয়া হয়েছে। কোচবিহারের পরিবেশে রসুন, পেঁয়াজ, গোলমরিচ চাষের কিছুটা অনুকুল পরিবেশ থাকলেও উত্পাদন আশাপ্রদ নয় বলে দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। কৃষি আধিকারিকদের বক্তব্য, জেলার আবহাওয়ায় ওই সব ফল চাষের সমস্যা রয়েছে। তবে টবে চাষ করে সুফল মিলতে পারে। কোচবিহারের বাজারে লেবুর ব্যাপক চাহিদা থাকলেও, লেবু চাষের প্রচার নেই। বিভিন্ন বাজারে ফুলের কারবার শুরু হয়েছে। চাহিদাও বেড়েছে। অথচ নার্সারি গড়ে ওঠেনি। দার্জিলিং জেলা কিংবা সিকিমের চাষিরা ওই সব ব্যাপারে সাফল্য পেয়েছেন। সে কথা মাথায় রেখেই বিকল্প চাষে উত্সাহ দিতে জেলার দুই ব্লকের কৃষকদের প্রশিক্ষণ নিতে পাঠানো হয়েছে।
কীভাবে বাছা হল ওই কৃষকদের? দফতর সূত্রের খবর, ফার্মার্স ক্লাব ও কৃষি দফতরের মাধ্যমে ওই দুই ব্লকে বিকল্প চাষে উত্সাহ দিতে একাধিক শিবির করা হয়েছে। সেখানে অংশগ্রহণকারীদের মধ্য থেকেই উত্সাহী কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়।