জলপাইগুড়ি শহর থেকে ১০৫ কিলোমটার দূরে হওয়ায় খেলাধুলার ক্ষেত্রেও জেলা সদরের সঙ্গে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছিল আলিপুরদুয়ারের। অথচ ৫-৬ বছর আগেও জেলা ফুটবল দল হোক অথবা ক্রিকেট দলে আলিপুরদুয়ার মহকুমার খেলোয়াড়দের ভিড় বেশি থাকত। গত কয়েক বছর ধরে তাতে মারাত্মক রকম ভাঁটা পড়েছিল। এমনকী, নানা কারণে জেলার বিভিন্ন লিগে সেখানকার ফুটবল বা ক্রিকেট খেলোয়াড়রা অংশ নিচ্ছে না। তাই আলাদা জেলা গঠন হতেই খেলাধূলার জগতে আলিপুরদুয়ার এই অচলাবস্থা কাটবে বলে মনে করছেন ক্রীড়াপ্রেমীরা।
আলিপুরদুয়ার মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সচিব শঙ্কর ঘোষও মনে করছেন আলাদা জেলা গঠন এলাকার খেলাধুলার চর্চায় জোয়ার আনবে। তিনি বলেন, “এতদিন তো অতিরিক্ত জেলা শাসকের দফতরের একটি ঘরে একটি চেয়ার টেবিল। এটাই ছিল আমাদের জায়গা। খেলোয়াড়দের সেখানে ডাকলে প্রশাসনের কাজকর্ম লাটে উঠবে। তাই ডাকতেও পারতাম না।” তিনি জানান, এখন ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আলাদা ক্রীড়া সংস্থা হলে আলাদা অফিস থাকবে। লোকজন বসে পরিকল্পনা তৈরি করা যাবে। জেলা দল হলে বিভিন্ন খেলাতেই এখনকার ছেলেমেয়েদের সুযোগ থাকবে। আমরাও সরাসরি অনেক পরিকল্পনা নিতে পারব। যেটা এতদিন হচ্ছিল না।
জেলা গঠন নিয়ে ডামাডোলের মধ্যে তার প্রভাবও খেলাধূলার ক্ষেত্রে পড়ে বলে অভিযোগ।
মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার কর্তাদের অভিযোগ, আলাদা জেলা হওয়ার কথা থাকায় এখানকার খেলাধূলা নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থা আলাদা করে মাথা ঘামাতেন না। জলপাইগুড়ি জেলা ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তারা অবশ্য একথা মানতে নারাজ। সংস্থার সচিব অঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, “আলিপুরদুয়ার আলাদা জেলা হল। আলাদা ক্রীড়া সংস্থা হবে, তাকে স্বাগত জানাচ্ছি। দূরত্বের জন্য আলিপুরদুয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বা খেলা চালানো সমস্যা হত। একটা সময় জেলা ফুটবল ও ক্রিকেট দলে আলিপুরদুয়ার থেকে প্রচুর খেলোয়াড় পেতাম।”
তিনি জানান, গত কয়েক বছরে খেলার দিকে আলিপুরদুয়ার তেমন নজর দিচ্ছিল না। অংশও নিচ্ছিল না। শুনেছি জেলা গঠনের পর ওখানকার লোকজন খেলাধূলায় জোর দেবেন বলে মনে করছিলেন। আলিপুরদুয়ারের ক্রীড়া সংগঠনকদের একাংশ জানান, আলিপুরদুয়ারে ফুটবলে আলাদা লিগ হত। চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স দল জেলা স্তরে অংশ নিত। তাতে সব দল অংশ নিতে পারত না। মাঝে নিয়ম হয়, খেলোয়াড়রা জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে দু’জায়গাতেই খেলতে পারবে। তাতে আলিপুরদুয়ারের গুরুত্ব কমে যায়। এরপরে আর্থিক সমস্যা প্রবল হয়ে ওঠে।