লোকসভা ভোটের মুখে মালদহে তৃণমূলের কর্মীসভায় ‘কোতোয়ালি ভবনে তালা মারা’র ডাক দেওয়া নিয়ে বেধেছে বিতর্ক। গনিখান চৌধুরীর পারিবারিক বাসভবন সম্পর্কে দলেরই এক নেতা এ কথা বলার পরে অস্বস্তিতে পড়েন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের কথা উল্লেখ করে পাল্টা কটাক্ষ করেন গনিখান চৌধুরীর ভাই তথা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার মালদহ কলেজ অডিটোরিয়ামে তৃণমূলের জেলা সভানেত্রী তথা রাজ্যের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র কর্মিসভা ডেকেছিলেন। মালদহের দুটি লোকসভা কেন্দ্রের প্রাথী সৌমিত্র রায় ও মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবিত্রীদেবী ও মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর সামনেই তৃণমূল নেতা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান স্বপন মিশ্র বলেন, “মালদহ জেলাকে বাঁচাতে কোতোয়ালি ভবনে তালা মারতে হবে। কোতোয়ালি ভবনের অবসান করতে হবে।”
কর্মিসভায় প্রকাশ্যে এ কথা বলায় অস্বস্তিতে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। দলের জেলা সভানেত্রী সাবিত্রী মিত্র বলেন, “এটা বলা ঠিক হয় নি। আমার মনে হয় স্বপন মিশ্র মুখ ফসকে ওই কথা বলে ফেলেছেন।” কৃষ্ণেন্দুবাবু বলেন, “স্বপন মিশ্র কোতোয়ালি ভবনে রাজনৈতিকভাবে তালা মারার কথা বলেছেন। এখন আবু হাসেম ও মৌসমরা কোতোয়ালির বাড়িকে ভাঙিয়ে খাচ্ছে। তা আর চলবে না। এ বার লোকসভা নিবার্চনে মানুষ ওদের হারিয়ে দিলে কোতোয়ালি বাড়িতে এমনিতেই তালা বন্ধ যাবে। এ ভাবেই কোতোয়ালিতে তালা বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে।”
স্বপনবাবুর এই মন্তব্যের কথা শুনে ক্ষু্ব্ধ কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী আবু হাসেম খান চৌধুরী। তাঁর অভিযোগ, “তৃণমূল নেতারা এখন দম্ভে উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। মালদহের মানুষ কোতোয়ালির হাতে ক্ষমতা দিয়েছেন। সেই মানুষই কোতোয়ালিকে রক্ষা করবে। এ বার ভোটেই মানুষ এর জবাব দেবেন।”
প্রসঙ্গত, এ দিন তৃণমূলের এই কর্মিসভাতেই সাবিত্রীদেবী ও কৃষ্ণেন্দুবাবুর কোন্দল প্রকাশ্যে আসে। সেই প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আবু হাসেমের কটাক্ষ, “এ দিনই তো শুনলাম তৃণমূলের দুই নেতা-নেত্রী প্রকাশ্যে বিবাদ করেছেন। তাঁরা যদি ভেবে থাকেন কোতোয়ালিতে তালা ঝোলাবেন, তাহলে তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মৌসম বেনজির নূর বলেন, “আমি এই ছোট ছোট কথার কোনও উত্তর দিতে চাই না।”