এইমস (ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস) হাসপাতাল কেন রায়গঞ্জের বদলে নদিয়ায় গড়া হবে, রাজ্য সরকারকে তা হলফনামা দিয়ে আদালতে জানাতে হবে। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে।
রাজ্য সরকার রায়গঞ্জে এইমস হাসপাতাল গড়তে না চাওয়ায় সেখানকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি এবং পশ্চিম দিনাজপুর চেম্বার্স অব কমার্সের সম্পাদক সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থে মামলা দায়ের করেছেন। এ দিন ওই মামলার শুনানি ছিল।
মামলার আবেদনকারীদের আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ আদালতে জানান, উত্তরবঙ্গে এইমস হাসপাতাল গড়ার দাবি অনেক দিনের। ২০০৭ সালে তত্কালীন কেন্দ্রীয় সরকার নিদ্ধান্ত নেয়, উত্তরবঙ্গের রায়গঞ্জে ওই হাসপাতাল হবে।
তত্কালীন কেন্দ্রীয় সরকার হাসপাতাল তৈরির অনুমতিও দেয়। হাসপাতাল তৈরির জন্য রাজ্য সরকারকে জমি অধিগ্রহণ করতে বলা হয়েছিল। অরুণাভবাবু এ দিন আদালতে অভিযোগ করেন, ২০১৩ সালে বর্তমান রাজ্য সরকার বিনা কারণে রায়গঞ্জ থেকে নদিয়ায় ওই হাসপাতাল সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
কী কারণে রায়গঞ্জে এইমস হাসপাতাল গড়া দরকার, আদালতে তারও ব্যাখ্যা দেন অরুণাভবাবু। তিনি জানান, গোটা উত্তরবঙ্গে সাকুল্যে দু’টি বড় হাসপাতাল রয়েছে।
অথচ কলকাতা বা তার লাগোয়া এলাকায় ওই ধরনের হাসপাতাল রয়েছে ৭৮টি। রায়গঞ্জে কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রণাধীন হাসপাতাল হলে কেবল উত্তরবঙ্গের মানুষই নন, লাগোয়া বিহার এবং অসম-সহ উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক রাজ্যের বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। চিকিত্সার জন্য তাঁদের কলকাতা বা তার লাগোয়া এলাকার হাসপাতালগুলিতে আসতে হবে না। একই সঙ্গে অরুণাভবাবু বলেন, রাজ্য সরকার যে জেলায় এইমস হাসপাতাল তৈরি করতে চাইছে, সেই জেলাতেও একাধিক হাসপাতাল রয়েছে। কাজেই রায়গঞ্জেই ওই হাসপাতাল তৈরির নির্দেশ দিক আদালত।
রাজ্যের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অভ্রতোষ মজুমদার এ দিন আদালতে জানান, রায়গঞ্জে জমি পাওয়ার সমস্যা রয়েছে। সেই কারণেই নদিয়া জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
এর পরেই প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, কেন নদিয়ায় এইমস হাসপাতাল তৈরি হবে, রাজ্য সরকার তা হলফনামা দিয়ে জানাক। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ছ’সপ্তাহ পরে। রাজ্য তার আগেই ওই হলফনামা দাখিল করতে হবে।