মোদী ‘হাওয়া’র সঙ্গে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল নিয়ে বিরোধীদের প্রচারের জেরেই কংগ্রেসের ‘গড়’ বলে পরিচিত রায়গঞ্জে লোকসভা আসনে দীপা দাশমুন্সিকে হারতে হয়েছে বলে মনে করছেন জেলা কংগ্রেস নেতারা। অন্তত বৃহস্পতিবার হারের কারণ খুঁজতে পর্যালোচনা বৈঠকে এমনটাই উঠে আসছে। সেই সঙ্গে দলের একাংশ কর্মীদের অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসও দলকে ডুবিয়েছে বলে বৈঠকে একাংশ নেতারা জানিয়েছেন।
এ দিন বিকেলে রায়গঞ্জে কংগ্রেসের জেলা কার্যালয়ের পর্যালোচনা বৈঠকে জেলার নয়টি ব্লক, শহর, জেলা কমিটির নেতারা-সহ জেলার তিন কংগ্রেস বিধায়ক ও চারটি পুরসভার চেয়ারম্যানেরা উপস্থিত ছিলেন। তবে, যাঁর হারের কারণ পর্যালোচনা করতে বৈঠকটি ডাকা হয়েছিল, সেই দীপাদেবী-ই অবশ্য এ দিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন। জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তের দাবি, “দীপাদেবী পারিবারিক ও ব্যক্তিগত কাজে দিল্লিতে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি।”
গত ১৫ বছর ধরে রায়গঞ্জ কেন্দ্রটি নিজেদের দখলে রেখেছিল প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির পরিবার। তবে এবারে বাম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমের কাছে ১৬৩৪ ভোটে দীপাদেবী পরাজিত হন। এ দিনের বৈঠকে এসেছে এইমস প্রসঙ্গ। রায়গঞ্জে এইমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরি করার দাবিকে এ বার ভোটের প্রচারে সে ভাবে তুলে ধরা যায়নি বলে নেতারা স্বীকার করেছেন। বরং এইমস নিয়ে পাল্টা প্রচারে জমি অধিগ্রহণ না হওয়ার বিষয়টিকে বিরোধীরা কাজে লাগাতে পেরেছে বলে কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন। সেই সঙ্গেই নেতারা স্বীকার করেছেন, দলের সমর্থকদের একাংশের ভোট-ই বিজেপির পক্ষে পড়েছে। দ্বিতীয়ত, সাংসদ দীপাদেবীর উদ্যোগে হওয়া বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার যথাযথ ভাবে বাসিন্দাদের কাছে তুলে ধরা যায়নি।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেসের হাত থেকে বামফ্রন্ট জেলা পরিষদ ছিনিয়ে নেওয়ার পরে বাসিন্দাদের সঙ্গে জনসংযোগ বাড়াতে কংগ্রেস নেতাদের যা ভূমিকা নেওয়া উচিত ছিল, তা তাঁরা নেননি বলে বৈঠকে কিছু নেতা অভিযোগও করেছেন। প্রসঙ্গত, ভোটের ফল বের হওয়ার পরেই কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে আসে। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পবিত্র চন্দ বলেন, “বিভিন্ন সমস্যায় আরও বেশি করে মানুষের পাশে থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দীপাদেবীকেও নিয়মিত জেলায় থেকে বিভিন্ন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার ও জনসংযোগ বজায় রাখার অনুরোধ করা হবে।”