উত্তরের কড়চা

কারও পাখনায় নীলচে আভা, কারও লালের ছোঁয়া,কারও আবার পাখনা সাজানো হলুদ কালোয়। ব্লু প্যানসি, গ্রেট এগফ্লাই, চকোলেট প্যানসি এরকম হরেক প্রজাতির প্রজাপতি সংরক্ষণের জন্য বালুরঘাট শহরে তৈরি হচ্ছে প্রজাপতি পার্ক।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০১৪ ০১:৩৭
Share:

ছবি: অনিতা দত্ত

ডানা মেলল প্রজাপতি পার্ক

Advertisement

কারও পাখনায় নীলচে আভা, কারও লালের ছোঁয়া,কারও আবার পাখনা সাজানো হলুদ কালোয়। ব্লু প্যানসি, গ্রেট এগফ্লাই, চকোলেট প্যানসি এরকম হরেক প্রজাতির প্রজাপতি সংরক্ষণের জন্য বালুরঘাট শহরে তৈরি হচ্ছে প্রজাপতি পার্ক। শহরেরই একটা পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ‘দিশারী সংকল্প’ এই পার্ক তৈরির মূল উদ্যোক্তা। দক্ষিণ দিনাজপুরে পূর্ত বিভাগের তিন হাজার বর্গ মিটার জমিতে তৈরি হচ্ছে এই প্রজাপতি পার্ক। দক্ষিণ দিনাজপুরের পূর্ত বিভাগের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরূপ রায় বলেন, “দফতরের এই জায়গাটা যাতে জবরদখল না হয়ে যায় সেই জন্য জমিটি ওই সংগঠনকে অস্থায়ী ভাবে ব্যবহার করারও অনুমতি দেওয়া হয়েছে।” ২০১১ সালে বালুরঘাট সংলগ্ন অযোধ্যা গ্রাম, রঘুনাথপুর ফরেস্ট,দোগাছি ফরেস্ট, ও বালাপুর এলাকায় প্রজাপতির উপর সমীক্ষা চালিয়েছিল‘দিশারী সংকল্প’ নামের এই সংগঠন। সংগঠনের সদস্যদের দাবি, সমীক্ষায় প্রায় ৪০ রকম প্রজাতির প্রজাপতির সন্ধান মিলেছিল। তখনই দেখা যায় বছর দশ আগেও ব্লু প্যানসি, গ্রেট এগফ্লাই, চকোলেট প্যানসি দেখা গেলেও বর্তমানে তাদের সংখ্যা কমে এসেছে অনেকটাই । হারিয়ে যেতে বসেছে খয়েরি পাখনার লেসার মামি , কালো ও ময়ূরকণ্ঠী নীল পাখনার ব্লু প্যানসিও। বিশেষ দেখা যায়না ইন্ডিয়ান সানবিম,বা রেড পাইরটও। এমনকি পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাপতির সংখ্যাতেও তারতম্য রয়েছে বলে দাবি তাঁদের। ‘দিশারী সংকল্প’ সম্পাদক তুহিনশুভ্র মণ্ডলের মতে, বিশ্ব উষ্ণায়নের দাপটে শহর ও সংলগ্ন অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি হারিয়ে যাচ্ছে বা সংখ্যায় কমে যাচ্ছে। তাই প্রজাপতির সংরক্ষণে উদ্যোগী হয়েছেন তারা। এই পার্কে এসে প্রজাপতির জীবনচক্র প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবেন সবাই। জায়গাটা জাল দিয়ে ঘেরার জন্য পূর্ত দফতরের সঙ্গে ইতিমধ্যেই মৌখিক কথাবার্তা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তুহিনশুভ্রবাবু। এ দিকে পূর্ত দফতর, ওয়েস্ট বেঙ্গল বায়োডাইভার্সিটি বোর্ডের কাছে পার্কের অনুমোদন চাওয়ায় প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই বোর্ডের রিসার্চ অফিসার অনির্বাণ রায়। তুহিন শুভ্র বাবু জানিয়েছেন সেন্ট্রাল জু অথরিটির কাছ থেকেও অনুমোদন নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রজাপতিরা যে সমস্ত গাছের ফুল ও পরাগ পছন্দ করে বা যে সব গাছে বাসা বাঁধতে তারা অভ্যস্ত, সংগঠনের তরফে পার্কে সে সব গাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পার্কের নকশা অনুযায়ী প্রায় দুশো রকমের গাছ লাগানো হচ্ছে। তার মধ্যে রয়েছে অমলতাস, গুল্ম জাতীয় ফুল, কুলের গাছ, ঘাসফুল ইত্যাদি। দক্ষিণ দিনাজপুরে এডিএফও মানস আচার্য জানান, বন দফতর থেকে মূলত চামেলি, অতসী, বেলী, রঙ্গন, কুন্দ, গন্ধরাজ ইত্যাদি ধরনের গাছ সরবরাহ করা হবে এই পার্কে।

Advertisement

অভিযান

অভিযানের নেশায় দঙ্গলে মিলে বেরিয়ে পড়ত ওরা। দুয়ার থেকে অদূরে, কখনও জয়ন্তীর জঙ্গলে, কখনও বা বক্সা পাহাড়। ছুটির দিন হলে দল ভারী হত। আলিপুরদুয়ারের এই রোমাঞ্চপ্রেমীদের পূর্ব অভিজ্ঞতা ও সক্রিয় উৎসাহেই জন্ম নিল নন্দাদেবী ফাউন্ডেশন। দেখতে দেখতে নন্দাদেবীর বয়স হল আঠাশ, ধীরে ধীরে উন্মীলিত শৃঙ্গ ছোঁয়ার স্বপ্ন, ট্রেকিং পথে অ্যাডভেঞ্চারের হাতছানি। বেরিয়ে পড়ে পাহাড়ের ডাকে প্রকৃতির মাঝে। পায়ে পায়ে সান্দাকফু ফালুট নাইট ট্রেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২০,৫৬৫ ফুট উঁচুতে হিমালয়ের করচা পর্বত অভিযান। সাত অভিযাত্রী ছুঁয়ে আসেন ২০,০০৪ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত হিমাচল প্রদেশের চন্দ্রভাগা শৃঙ্গ। অজানা অচেনা রোমাঞ্চের অন্বেষণে কখনও সিকিমের জোংরি উপত্যকায়, কখনও বা গো-চালা অভিযানে। সংস্থার উদ্যোগে ফি বছর জয়ন্তীর হাওদা এলাকায় ছাত্রছাত্রীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় পর্বতারোহণের। শিশু-কিশোরদের জন্য জন বসে প্রকৃতি-পাঠের শিবির। আলাদা করে বলতে হয় সংস্থার মহিলা সদস্যদের কথা। ’৯৪-তে টাটা ফাউন্ডেশনের আয়োজনে ফার্স্ট ইন্ডিয়ান ওমেন রাফটিং-এ গঙ্গাবক্ষে হরিদ্বার থেকে কলকাতা দীর্ঘ ২৫০০ কিমি পথে দুঃসাহসিক অভিযানে অংশ নেন রুমা রায়। এনসিসি-র উদ্যোগে উত্তরপ্রদেশের রুদ্রগয়ার শৃঙ্গ অভিযানে সংস্থার নির্বাচিত সদস্য শিখা মুখোপাধ্যায় সফল অভিযান শেষে পান গভর্নর’স মেডেল। টুম্পা, শিখা, সুস্মিতা পেয়েছেন ডিস্ট্রিক্ট ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের শিরোপা। সংস্থার সদস্যরা শৃঙ্গ অভিযান শুধু নয়, নানা সময়ে নানা বিষয়ে নিজেদের ছড়িয়ে দিয়ে বাড়িয়েছেন কর্মকাণ্ডের পরিধি। নানা জনকল্যাণ কাজে জড়িত থেকেছেন। আয়োজন করেছেন এলাকার বনবস্তিগুলোতে স্বাস্থ্য বা চক্ষু শিবির। কর্মসূচি নিয়েছেন বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণেরও। পথে নেমেছেন মাদক বিরোধী বা এড্স সম্পর্কে প্রচারাভিযানে। দার্জিলিঙের রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় পৌঁছে দিয়েছেন ‘প্যাডেল ফর পিস’-এর বার্তা। পোলিও দূরীকরণ কর্মসূচি বা বনবাসীদের উন্নয়নকল্পে আয়োজন করেন মাইক্রো প্ল্যানিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস প্রোগ্রামের মতো উন্নয়নমূলক কাজের। কখনও সদস্যরা সদলে নামেন পার্থেনিয়াম নির্মূল অভিযানে। আদায় করেছেন যুব বিকাশ কেন্দ্রের স্বীকৃতি। আলিপুরদুয়ার ও আশপাশে বেকারদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া থেকে দক্ষ ও স্বনির্ভর করার জন্য ব্যবস্থা করা হয় নানা সময় ভোকেশনাল ট্রেনিংয়ের। সম্পাদক স্বপন মজুমদার জানান, সদস্যরা পরিকল্পনা নিয়েছেন চলতি বছরেই শৃঙ্গ বিজয় অভিযানের। খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন সাহস ও সংকল্প অভিযানের আবশ্যিক শর্তাদি।

গুটিপুয়া কর্মশালা

জলপাইগুড়ি জেলা গ্রন্থাগারের হলঘরটি সকাল ৯টা থেকে ৫টা মুখরিত ছিল ওড়িশার গুটিপুয়া নৃত্য-মূর্চ্ছনায়। জলপাইগুড়ির রিনা স্টাডি গ্রুপ ফর ডান্স ও ইজেড সিসিও-র যৌথ উদ্যোগে ২০-৩০ জুলাই এখানে চলেছে এই নৃত্যের কর্মশালা। শাস্ত্রীয় ওড়িশি নৃত্যের শিকড় নিহিত গুটি পুয়া নৃত্যশৈলীতে। আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে উড়িষ্যার শিব ও কৃষ্ণের মন্দিরগুলোতে গুটি পুয়া নৃত্যের প্রচলন হয়। মাহারী (দেবদাসী) নৃত্যের মতো এই নৃত্যের মাধ্যমে দেবতার সেবা করা হত। গুটি পুয়া শব্দের অর্থ ‘একটি বালক’। ছোট ছেলে মেয়ে সেজে মন্দিরে নিয়মিত নৃত্যসেবা করত। সেই পরম্পরা এখনও চলছে। গুরুকুলে ছেলেদের শিক্ষা শুরু হয় চার পাঁচ বছর বয়সে থাকতে হয় চোদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত। ওড়িশি নৃত্যের অধিকাংশ গুরু শৈশবে গুটি পুয়া শিক্ষা করেছেন। পদ্মবিভূষণ কেলুচরণ মহাপাত্র যেমন ছিলেন রঘুরাজপুর গুরুকুলে। জলপাইগুড়ির কর্মশালায় প্রশিক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন গৌতমকুমার মহাপাত্র। ওড়িশার প্রত্যন্ত গ্রাম ডিমিরিসেনার নীলকণ্ঠিকেশ্বর মন্দিরের গুরুকুলে তিনি নৃত্যশিক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, “শাস্ত্রীয় ওড়িশি নৃত্যরীতিতে যেমন পরপর মঙ্গলাচরণ বটু পল্লবী সঞ্চারী মোক্ষ করা হয়, তেমনই গুটি পুয়াতে আছে জাগরণ বটু সারিগামা অভিনয় মোক্ষ। তবে গুটি পুয়ার আরও দুটি অংশ হল বন্ধনৃত্য ও বিদায়ী। বন্ধনৃত্যে দলবদ্ধ ভাবে পৌরাণিক বিষয়বস্তু বা ঘটনার দৃশ্যরূপ নির্মাণ করা হয়। যেমন, কেলিকদম্ব, জগন্নাথ রথ, কালীয়দমন, বকাসুর।” গুটিপুয়ার বৈশিষ্ট্য, নৃত্যশিল্পীরাই গান গেয়ে নৃত্য পরিবেশন করেন। ওড়িশি নৃত্য অনুশীলনে গুটি পুয়া নৃত্য সম্বন্ধে ধারণা থাকা জরুরি মনে করেন গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রের শিষ্য, সংস্থার কর্ণধার সৌগত মুখোপাধ্যায়। ওই কর্মশালায় এসেছিল ৩২ জন ছেলেমেয়ে। ৩০শে সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভারত সরকারের শৃঙ্গারমণি সম্মানপ্রাপ্ত, সৌগতবাবুর গুরু ও সতীর্থ রিনা জানা ইজেডসিসি-র তরফে ৩০ জনের হাতে শংসাপত্র তুলে দেন।

বিদ্যামন্দিরে দিব্যানন্দ

‘অহঙ্কার ও স্বার্থপরতা’ মানুষের জীবনে আসক্তির মূল কারণ। ওই দুই কারণে জীবনে নেমে আসে চরম অশান্তি। কী ভাবে ‘আসক্তিহীন কর্মই মানুষকে উন্নত চেতনায় উন্নীত করতে পারে’ তা সহজ সরল ভাষায় পড়ুয়াদের বুঝিয়ে দিলেন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশনের সারদা পীঠের অধ্যক্ষ স্বামী দিব্যানন্দ। ৩ অগস্ট, রবিবার মালদহে বিদ্যমন্দিরের ৫০ বছর পূর্তি উৎসবের সারা বছর জুড়ে যে কর্মসূচি তারই অঙ্গ হিসেবে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। মানিকচকের শিক্ষা নিকেতনে খোলা পরিবেশে গাছতলায় ওই সভায় অধ্যক্ষের বক্তৃতা শুনে মুগ্ধ হন সকলেই।

লোকসঙ্গীত মেলা

ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারের উদ্যোগে এবং তুফানগঞ্জের উত্তরবঙ্গ রিসার্চ অ্যান্ড হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের আয়োজনে উত্তরবঙ্গ লোকসঙ্গীত মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেল। ৭টি জেলা থেকে লোকগানের নানা বিভাগে ৪০০ শিল্পী অংশগ্রহণ করেন। দীনেশ রায়ের তুঙ্গ্যা, পালটিয়া, ময়নাগুড়ির শিল্পী বুধেশ্বরী রায়ের তিস্তা বুড়ির গান, দার্জিলিং জেলার দেবলাল সিংহ, অমর সিংহর পাঁচালি, খড়িবাড়ির তরুণ সিংহের লাহাংকারী, সুমিত্রা রায় ও বকুল রায়ের ভাওয়াইয়া, সোনা রায়ের গান, কামেশ্বর রায়ের খ্যাপার গান উপস্থাপিত হল দর্শকের দরবারে। সঙ্গীত মেলার দ্বিতীয় দিন ‘লোকসঙ্গীতের পরিবতর্ন ও সঙ্কট’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে মুখ্যবক্তা লোকসংস্কৃতি বিশেষজ্ঞ দীপক রায় বলেন, “সময়ের স্রোতে পরিবর্তন স্বাভাবিক, জোর করে পরিবর্তন ঘটালে লোকসঙ্গীতের বিনাশ অনিবার্য। লোক আঙ্গিক রক্ষা করতে গেলে শিল্পীদের ‘মান’ ও ‘হুঁশ’ থাকাটা জরুরি।” আলোচকদের মধ্যে ছিলেন নজরুল হক এবং জ্যোতির্ময় রায়। দেখা গেল রাভা, মেচ, বোড়ো, টোটো গোষ্ঠীর লোকসঙ্গীত ও নৃত্যের টুকরো নিদর্শন।

অন্য রকম চড়ুইভাতি

শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বসুন্ধরায় কবিতার চড়ুইভাতির আয়োজন করেছিল ‘মেঘ বৃষ্টি রোদ্দুর’ নামে এক সংস্থা। ‘কবিদের কবিতার চড়ুইভাতি’ নামে এই অনুষ্ঠানে রাজ্য ও রাজ্যের বাইরের কবিরা কবিতা পাঠ করেন। অনুষ্ঠানের কর্ণধার সঙ্গীতা পাল জানিয়েছেন, পুণ্যশ্লোক দাশগুপ্ত, গৌরীশঙ্কর ভট্টাচার্য, রাজর্ষি চট্টোপাধ্যায়, সার্থক রায় চৌধুরী, দিলীপ ফৌজদার, তৃপ্তি সান্ত্রা, গৌরমোহন রায়, সরোজ দেব কবিতা পাঠ করেন। ২০ ঘণ্টা অনুষ্ঠান চলে। পুণ্যশ্লোক প্রকাশ করেন ‘মেঘ বৃষ্টি রোদ্দুর’ পত্রিকার তৃতীয় বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা।

আকাশ দেখায় মশগুল

আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নে মশগুল অঙ্কিতা, দর্পণরা। তবে ছুঁতে চাইলেই কি সম্ভব? আগে দেখে চিনতে হবে চাঁদের গর্ত, শনির বলয়, বৃহস্পতি। বহু দূরের গ্রহ-উপগ্রহদের কাছে টানার যন্ত্র তৈরি করেই আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্নের হাতেখড়ি হল অঙ্কিতাদের। নিজের তৈরি ‘টেলিস্কোপ’ দিয়ে শুরু। সোয়ানের উদ্যোগে শিলিগুড়িতে হয়ে গেল ‘টেলিস্কোপ’ তৈরির কর্মশালা। ১৫০ পড়ুয়াকে ২৫ দলে ভাগ করে টেলিস্কোপ বানানো শেখানো হয়।

দুঃস্থ মেধাবীদের পাশে

সংস্কৃতিচর্চার সঙ্গে দুঃস্থের পাশে দাঁড়ানোর ধারাবাহিকতা বজায়ের চেষ্টা করছে শিলিগুড়ি ‘উবাচ’ সংস্থা। ১৯ জুলাই মিত্র সম্মিলনীর সুরেন্দ্র মঞ্চে দুই মেধাবী শিলিগুড়ির বুদ্ধভারতী স্কুলের দশম শ্রেণির বিক্রম পাল, বরদাকান্ত বিদ্যাপীঠের একাদশ শ্রেণির শুভঙ্কর রায়কে সংস্থা ২০১৪ সালের মেধা সম্মান দিয়েছে।

তিয়াত্তরের যুবক

সময় তাঁর কাছে হার মেনেছে। না হলে ৭৩ বছর বয়সে প্রদোষকুসুম সিকিমের ভার্সেতে ট্রেকিংয়ে যান? প্রকৃতির ইশারায় সাড়া দেওয়া সেই ১৯৫২ থেকে। প্রদোষকুসুম দাস তখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে। তখন থেকেই ছোট ছোট ট্রেক করতেন। পাহাড়ে চড়ার সূত্রপাত কলেজ জীবন থেকেই। পশ্চিমবেঙ্গের প্রতিনিধিত্ব করে জীবনের প্রথম ট্রেকিং অসমের দিগারোতে। এখনও পর্যন্ত তাঁর ট্রেকিংয়ের সংখ্যা পঞ্চাশ ছুঁই ছুঁই। গত কুড়ি বছর ধরে শিক্ষকতার দায়িত্ব নিয়েছেন প্রকৃতি পাঠ এবং শৈলারোহণ শিবিরের। ১৯৮৮ সালে গিয়েছিলেন মুক্তিনাথ। ‘নেচার অ্যান্ড ট্রেকার্স ক্লাব অব জলপাইগুড়ি’-এর জন্ম সেখানেই। সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সদস্যদের মধ্যে তিনি এক জন। তাঁর সময়ে কেমন ছিল ট্রেকিংয়ের অভিজ্ঞতা? তাঁর কথায়, “তখন যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ছিল না। ছিল না স্পনসর। খরচ বহন করতে হত নিজেদেরই। রাস্তায় বন্য জন্তুর সমস্যাও ছিল। তবে মনোবল আর ইচ্ছা সব রকম প্রতিকূলতাকে হারিয়ে সামনে হাঁটার প্রেরণা জোগাত।” এই প্রজন্ম কি আগ্রহী অ্যাডভেঞ্চারে? তাঁর কথায়, “অ্যাডভেঞ্চারে আত্মবিশ্বাস তৈরি করে। জন্ম দেয় নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা। কেরিয়ারে হাতছানিতে নতুন প্রজন্মকে প্রকৃতিপ্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় করে তোলাটা কঠিন। সেই কঠিন কাজটা করারই চেষ্টা করছি।” সে প্রচেষ্টা অনেকটা সফল। ট্রেকিং পরম্পরার ঐতিহ্য বহন করছে তাঁর পুত্র ভাস্কর। সেই ঐতিহ্যের উত্তরাধিকারী তাঁর সাড়ে চার বছরের পৌত্রও । তিন প্রজন্মের এ ট্র্যাডিশন নিঃসন্দেহে চমকপ্রদ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement