সন্দেহ খুন

ইসলামপুরে ওড়নার ফাঁসে মৃত্যু কিশোরীর

ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধারকে ঘিরে মঙ্গলবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়া এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ইসলামপুর শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৩০
Share:

ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর দেহ উদ্ধারকে ঘিরে মঙ্গলবার চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়া এলাকায়। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রীকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। গত সোমবার রাত থেকে ওই ছাত্রী নিখোঁজ ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে বাড়ি থেকে তিনশো মিটার দূরে একটি ধানখেত থেকে ওই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত ছাত্রীর নাম আনিসা বেগম (২০)। সোমবার সন্ধ্যায় জেরক্স করার কথা বলে আনিসা বাড়ি থেকে বের হয়, তার কিছু পরে দিদির বাড়ি যায় এবং সেখান থেকে বাড়ি ফেরার সময় ছাত্রীটি নিখোঁজ হয়ে যায় বলে পুলিশ জানিয়েছে। ওই কিশোরীর সঙ্গে থাকা মোবাইল ফোনের অবশ্য কোনও হদিস পায়নি পুলিশ। সেই মোবাইলের সূত্র ধরেই ছাত্রী হত্যার রহস্যর সমাধান হবে বলে পুলিশ দাবি করেছে। এ দিন রাত পর্যন্ত অবশ্য ছাত্রীর পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

Advertisement

তবে ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়া এলাকাতে প্রায় দেড় মাসে তিনটি কিশোরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল বলে বাসিন্দাদের দাবি। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও এলাকায় ক্ষোভ জন্মেছে। মাস খানেক আগে এক সন্ধ্যায় ধনতলা এলাকার বাঁশঝাড় থেকে এক কিশোরীর দেহ উদ্ধার হয়। পুজোর সময়ে গুঞ্জরিয়া এলাকা থেকেই আরেক কিশোরীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। ইসলামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে এই কিশোরীর পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে। ইতিমধ্যে অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

নিহত ছাত্রীর দাদা সাবির আলম গুঞ্জুরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের সিপিএম-এর সদস্য। তবে ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ রয়েছে বলে পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরেই আনিসার দিদির বাড়ি। এ দিন সন্ধ্যা প্রায় ৬টা নাগাদ দিদির বাড়ি থেকে বাড়ির দিকে আনিসা রওনা দেয় বলে জানা গিয়েছে। তার ঘণ্টাখানেক পরেও আনিসা বাড়ি না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি শুরু করে। রাতেই ইসলামপুর থানায় নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করা হয় আনিসার পরিবারের তরফে। রাতভর খোঁজ মেলেনি ছাত্রীর। এ দিন সকালে পড়শি এক কিশোরী ধানখেতে ওই ছাত্রীর দেহ দেখতে পান বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ছাত্রীর গলায় একটা ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ছিল। এমনকী মুখেও ওড়নার একটি প্রান্ত গোঁজা ছিল বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে বাসিন্দারা জড়ো হয়ে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়ে পুলিশকে দেহ তুলতে বাধা দেন। ঘটনার খবর পেয়ে ইসলামপুর থানার আইসি ও এসডিপিও ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহ উদ্ধারের ব্যবস্থা করে। বিকেল ৪টা নাগাদ জলপাইগুড়ি থেকে পুলিশ কুকুর আনিয়ে তদন্ত করে পুলিশ।

Advertisement

নিহত ছাত্রীর দাদা সাবির আলম বলেন, “আমাদের কোনও রাজনৈতিক শত্রু নেই বলেই জানি। কারও সঙ্গে প্রেম ঘটিত কোনও সম্পর্কের কথাও জানা নেই। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, তা পুলিশকে তদন্ত করে দেখতে হবে।” ইসলামপুরের গুঞ্জরিয়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএম-এর আজমল হুসেন বলেন, “পুলিশ প্রশাসনকে আরও বেশি সক্রিয় হতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement