চুরির তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
একটি বহুজাতিক সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটরের উত্তরবঙ্গের সদর দফতরের আলমারি ভেঙে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে পালাল দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে শিলিগুড়ি থানার অদূরে মিলনপল্লির মুকুন্দ দাস রোডে ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, একটি তিনতলা বাড়ির দোতলায় ওই ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস রয়েছে। দুষ্কৃতীরা বাড়ির কোনও গেটের বা দরজার তালা ভাঙেনি। নিচের থেকে নাইলনের দড়ি ব্যবহার করে দোতলার বারান্দায় উঠে তারজালির গ্রিল খুলে তারা ভিতরে ঢোকে। এরপর করিডর দিয়ে ভিতরে গিয়ে কাঁচের দরজা খুলে সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টরের ঘরে ঢোকে। ওই ঘরেই একটি আলমারিতে টাকার ব্যাগটি রাখা ছিল। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ও জি পাল বলেন, “সংস্থার কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আমরা কিছু সূত্র পেয়েছি। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় একজন ছিল না একাধিক, তা পুলিশের কাছে এখনও পরিস্কার নয়। পুলিশ জানিয়েছে, দফতরে নৈশ প্রহরী থাকলেও তিনি কিছু টের পাননি বলে দাবি করেছেন। এমনকি, রাত দেড়টার পর তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর কথাবার্তায় কিছু অসঙ্গতি থাকায় ওই নৈশপ্রহরীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। সংস্থার কর্মীরা রাতে অফিস থেকে বার হওয়ার পর কে কোথায় ছিলেন, তাও খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ নাইলনের দড়ি, দুটি চামড়ার হাত মোজা এবং মূল গেটের কাছে ২০ টাকার নোটের দুটি বান্ডিল উদ্ধার করেছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, যেভাবে আটঘাট বেঁধে চুরির ঘটনা ঘটেছে তাতে সংস্থার কোনও কর্মীর এতে জড়িত থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ ঘরের ঠিক কোথায় আলমারি রয়েছে। কোথায় কাঁচের দরজা রয়েছে, এবং বৃহস্পতিবার গুরু নানকের জন্মদিনে ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত দফতরে জমা পড়া টাকা যে অফিসেই রয়েছে তা বাইরের লোকের খুব একটা জানা সম্ভব নয়।
সংস্থার ক্যাশিয়ার জাকির হোসেন বলেন, “রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ সমস্ত টাকা ব্যাগে ভরে আলমারিতে রেখে যাই। সঙ্গে আরেক কর্মী ছিলেন। দফতরের অন্যঘরে রাত ১২টা পর্যন্ত কম্পিউটারের কাজের দুইজন ছেলে ছিল। সন্ধ্যা সাত’টা থেকে নৈশপ্রহরীও ছিল। সকালে সেই জানায়, দড়ি ঝুলছে, চুরি হয়েছে। সমস্ত দরজা, গেটে তালা ঠিকঠাকই ছিল। প্রায় ২০ লক্ষ টাকার বোঝাই ব্যাগটি নেই। তবে আলমারিতে খুচরো আরও এক লক্ষ টাকা ছিল। সেগুলি তেমনিই রয়েছে।”
ওই বাড়িতে বহুজাতিক সংস্থাটির ডিস্ট্রিবিউটরের অফিস ছাড়াও গুদাম ও অন১ কয়েকটি সংস্থার অফিস রয়েছে। সব মিলিয়ে একশো’র উপর কর্মী রোজ যাতায়াত করেন। ওই ডিস্ট্রিবিউটর সংস্থা’র অন্যতম কর্ণধার রাজীব অরোরা বলেন, “আমি শিলিগুড়ির বাইরে। তবে যেভাবে ঘটনাটি ঘটেছে, তাতে দফতর সম্পর্কে পুরোপুরি ওয়াকিবহাল কেউ বা কারা এতে জড়িত বলে মনে হচ্ছে। পুলিশ কমিশনারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”