আর শুধু রাজ্যই ভরসা নয়, দিল্লি যাওয়ার আগে জানালেন বিমল

রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ আরও বাড়াতে বিধানসভায় বিরোধী আসনে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের সমর্থিত বিজেপি’র প্রার্থী দার্জিলিং লোকসভা থেকে জেতা ও কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সঠিত হতে চলায় উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশ্নে আর রাজ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না বলেও জানিয়ে দেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৪ ০১:৩৪
Share:

এনডিএ-র বৈঠকে যোগ দিতে কলকাতা হয়ে দিল্লি যাবে মোর্চার প্রতিনিধি দল। সোমবার রাতে ট্রেনে কলকাতা রওনা হওয়ার আগে এনজেপি স্টেশনে বিমল গুরুঙ্গ, রোশন গিরি ও বিনয় তামাঙ্গ। বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

রাজ্য সরকারের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ আরও বাড়াতে বিধানসভায় বিরোধী আসনে বসার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাদের সমর্থিত বিজেপি’র প্রার্থী দার্জিলিং লোকসভা থেকে জেতা ও কেন্দ্রে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার সঠিত হতে চলায় উন্নয়নের বিভিন্ন প্রশ্নে আর রাজ্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে থাকতে হবে না বলেও জানিয়ে দেন মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ।

Advertisement

সোমবার মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বিরোধী বেঞ্চে বসার সিদ্ধান্ত হয়। এনডিএ-এর বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার দার্জিলিং থেকে দিল্লির উদ্দেশে যাওয়ার আগে মোর্চার প্রতিনিধি দলের তরফে বিনয় তামাঙ্গ বলেন, “গত রাজ্যসভার ভোটে আমরা রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গেই ছিলাম। কিন্তু, রাজ্য সরকারের আমাদের প্রতি যে বিরূপ মনোভাব তা পাহাড়বাসীরাও বোঝেন। সে জন্য বিধানসভায় আমাদের তিন বিধায়ক বিরোধী আসনে বসবেন বলে ঠিক হয়েছে। এটা আমাদের তরফে রাজ্যকে একটা বার্তা।”

গত বিধানসভা ভোটের তৃণমূলকে পাহাড় লাগোয়া সমতলের বিস্তীর্ণ এলাকায় সমর্থন করে মোর্চা। রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতাসীন হওয়ার পরে মোর্চা ট্রেজারি বেঞ্চেই বসেছে। মাঝখানে দূরত্ব তৈরি হলেও গত রাজ্যসভার ভোটে মোর্চার পাহাড়ের তিন বিধায়ককে রাজ্যের শাসক দলের সঙ্গেই দেখা গিয়েছে। কিন্তু, লোকসভা ভোটে মোর্চার সমর্থনে পাহাড়ে বিজেপি প্রার্থী জিতেছেন। এনডিএ-এর শরিক হিসেবে নয়াদিল্লিতে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। নব নির্বাচিত সাংসদের শপথগ্রহণেও তাঁদের ডাকা হয়েছে। মোর্চার প্রতিনিধি দলে গুরুঙ্গ, তামাঙ্গ ছাড়া রয়েছেন রোশন গিরি, স্বরাজ থাপা ও জ্যোতি কুমার রাই।

Advertisement

সোমবার রাতে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পদাতিক এক্সপ্রেসে কলকাতা রওনা হন মোর্চার প্রতিনিধিরা। আজ, মঙ্গলবার কলকাতা থেকে দিল্লিতে এনডিএ’র বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন তাঁরা। শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠানের আগে এনডিএ’র শরিকদের বৈঠকে যোগ দিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেবেন তাঁরা। এ দিন রওনার হওয়ার আগে এনজেপি স্টেশনে বিমল জানান, “এনডিএ-র বৈঠকে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছি। উন্নয়নের বিভিন্ন বিষয়ে কথা হবে। শুধু পাহাড়ই নয়, শিলিগুড়ি, ফাঁসিদেওয়া, নকশালবাড়ির মতো দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা সমতল এলাকার উন্নয়নের জন্যও আমরা সচেষ্ট হব। এখন আর সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীর মুখাপেক্ষী হয়ে থাকার দরকার হবে না।”

মোর্চা সূত্রেই খবর, দাবি দাওয়া আদায়ে এত দিন পর্যন্ত রাজ্যের উপরেই নির্ভর করে থাকতে হত তাদের। লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে রাজ্যে শাসক দল তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ে মোর্চার। পাহাড়ে রাজ্য সরকারের তরফে লেপচা, তামাংদের জন্য আলাদা উন্নয়ন বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্তকেও ভাল চোখে দেখেনি তারা। পাহাড়ে মোর্চার ক্ষমতাকে খর্ব করতেই রাজ্যে শাসক দল তা করেছে বলেও মোর্চা সরব হয়। ভাইচুং ভুটিয়াকে তৃণমূল প্রার্থী করায় সরাসরি বিরোধিতার রাস্তায় নামে মোর্চা। তারা বিজেপি’কে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেন। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠন হওয়ায় উন্নয়নের প্রশ্নে তাই রাজ্যের উপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে ওঠা যাবে বলে তাঁরা মনে করছেন। আলাদা রাজ্যের দাবি নিয়েও মোর্চা কেন্দ্রের নতুন সরকারের উপর আশাবাদী। বিমল গুরুঙ্গ বলেন, “ওই দাবি থাকছেই। কেন্দ্রে বিজেপি সরকার গঠিত হওয়ায় সে ব্যাপারেও আমরা আশাবাদী।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement