পাঁচিল ভেঙে গিয়েছে। চুরি হয়ে হয়ে ইটও অবশিষ্ট নেই বললেই চলে। ছবিটি তুলেছেন অভিজিত্ পাল।
‘চর্মনগরী’ গড়া হবে বলে বাম আমলে ঘোষণা হয়েছিল। সে জন্য জমিও চিহ্নিত হয়েছিল। ঘটা করে শিলান্যাসও হয়। জমি ঘিরে পাঁচিলও তৈরি হয়। এর পরে সব থমকে যায়।
রাজ্যে পালাবদলের পরে তৃণমূলের সরকার এলেও অবস্থার বদল হয়নি উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে। ধীরে ধীরে চর্মনগরীর জমি ঘিরে যে পাঁচিল দেওয়া হয়েছিল, তার ইট চুরি হয়ে গিয়েছে। দুটি স্তম্ভ কোনওমতে টিকে রয়েছে। দু’টি খুঁটি বাদে প্রায় মাঠে পরিণত হয়েছে সেই এলাকা। সেই চর্মনগরী হবে কি না তা নিয়েও সংশয়ে পড়েছেন এলাকার চামড়া ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ী সংগঠন সূত্রের খবর, ২০০৮ সালে ইসলামপুর শহর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরের ধনতলা এলাকাতে প্রায় আড়াই একর জমি চিহ্নিত হয়। সেই চর্মনগরীর জন্য. প্রায় ১০ ফিটের উচু পাঁচিল হয়। গেটও লাগানো হয়েছিল সেখানে। তবে বামেরা গিয়ে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেও কাজ শুরু হয়নি। ইসলামপুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের জনশিক্ষা ও গ্রন্থাগার মন্ত্রী আবদুল করিম চৌধুরী বলেন, “ধনতলাতে চর্মনগরীর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। তবে সেখানে ইট বা গেট খুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানা নেই। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়াতে চামড়ার ব্যবসার উপর নির্ভরশীল কয়েকশো বাসিন্দা। এমনকী, ভিনরাজ্য থেকে ব্যবসায়ীরাও এখানকার চর্ম ব্যবসায়ীদের কাছে যাতায়াত করে থাকেন। ব্যবসায়ীদের দাবি, এলাকাতে চর্মনগরী গড়ে উঠলে লাভবান হতেন স্থানীয়রাই। পাঞ্জিপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাল মহম্মদ নিজেও চামড়ার ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, “এলাকাতে চামড়ার ব্যবসায়ীর উপর নির্ভরশীল থাকেন তিনশোরও বেশি ব্যবসায়ী। চর্মশিল্পের নগরী হলে উপকৃত হবেন এলাকার ব্যবসায়ীরাই।”
তবে বিষয়টি নিয়ে সিটুর উত্তর দিনাজপুরের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিকাশ দাস বলেন, “বাম আমলে এলাকার যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য চর্মশিল্প নগরী গড়ে তোলার কথা ভাবা হয়েছিল। এখন দেখা যাচ্ছে সেখানে পাঁচিলের গেট ও খুলে নিয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। এ সরকার বেকারদের জন্য কিছুই ভাবে না। কাজেই উত্তর দিনাজপুর পিছিয়ে পড়া জেলা পিছিয়েই থাকবে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, ইসলামপুরের ওই প্রস্তাবিত চর্মনগরী শিল্পটি কুটির শিল্প দফতরের আওতায় রয়েছে। সেই বিষয়ে অবশ্য জেলা আধিকারিকেরা কিছুই জানাতে পারেনি। তবে পাঁচিলের ইট ও গেট চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি। উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “মহকুমাশাসককে বলা হচ্ছে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য।”