মনে করা হয় জাপানে চাষ হওয়া মিয়াজ়াকি আমই বিশ্বের সব থেকে মূল্যবান আম। প্রতীকী ছবি।
মিয়াজ়াকি আম। মনে করা হয় জাপানে চাষ হওয়া এই আমই বিশ্বের সব থেকে মূল্যবান আম। এ বার মালদহে সেই মিয়াজ়াকি আম চাষ করার সিদ্ধান্ত নিল কৃষি দফতর। বিশ্ব বাজারে এই আম প্রায় দু’লক্ষ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। তাই রাজ্যের সব থেকে বেশি আমের চাষ হওয়া জেলাতেই মিয়াজ়াকি বাণিজ্যিক ভাবে চাষের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে কৃষি দফতর জানিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকে মিয়াজ়াকির বাগান তৈরির পরিকল্পনা করা হয়েছে। তার জন্যে ইতিমধ্যেই জাপান থেকে চারাগাছ নিয়ে আসার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই মালদহে সেই চারাগাছগুলি পৌঁছবে।
মালদহ আমের জন্য বিখ্যাত। স্বাদে গন্ধে অতুলনীয় ‘এক সে বড় কর এক’ প্রজাতির আমের চাষ হয় সেই জেলায়। সব মিলিয়ে একশোরও বেশি প্রজাতির আম চাষ হয়। চাহিদার কারণে মালদহ থেকে আম রপ্তানি করা হয় বাইরের দেশেও। তবে এখনও পর্যন্ত মিয়াজ়াকির মতো লক্ষাধিক মূল্যের কোনও আম মালদহে চাষ করা হয়নি।
ইংরেজবাজার ব্লক কৃষি দফতরের আধিকারিক সেফাউর রহমানের উদ্যোগেই মিয়াজ়াকি আম মালদহে চাষ করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘একটি বেসরকারি সংস্থার সহায়তায় জাপান থেকে মিয়াজ়াকি আম গাছের চারা নিয়ে আসা হচ্ছে। মোট ৫০ টি গাছের চারা আসছে। ভারতীয় টাকায় এক একটি চারাগাছের দাম পড়েছে প্রায় এক হাজার টাকা। এই গাছ গুলি থেকে কলম পদ্ধতিতে আগামীতে চারা তৈরি করা হবে। মালদহে আরও বাড়ানো হবে এই আমের চাষ।’’
অপিরপক্ক মিয়াজ়াকির রং অন্যান্য সাধারণ আমের মত সবুজ হয় না। কাঁচা অবস্থায় এই আমের রং হয় বেগুনি। পাকলে লাল রঙের হয়। ভারতীয় টাকায় প্রায় দু’লক্ষ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় এই আম। একটি আমের সর্বোচ্চ ওজন ৩৫০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। বর্তমানে শুধু মাত্র জাপান নয়, এই আম এশিয়ার একাধিক দেশে চাষ হচ্ছে। তাইল্যান্ড, পাকিস্তান ও বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে মিয়াজ়াকির চাষ। এমনকি ভারতবর্ষেও এই আমের চাষ শুরু হয়েছে। ভারতে প্রথম মধ্যপ্রদেশের এক কৃষক এই আমের চাষ শুরু করেন। কৃষি দফতরের তরফে আশা করা হচ্ছে স্থানীয় বাজারে লক্ষ টাকা দরে বিক্রি না হলেও কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি হতে পারে মিয়াজাকি। ফলে এই আমের চাষ সফল হলে জেলার অর্থনীতি চাঙ্গা হবে বলেও প্রশাসনের তরফে আশা করা হচ্ছে। তবে এই আম চাষের মূল উদ্দেশ্য বিদেশে রপ্তানি করা বলে জানিয়েছে কৃষি দফতর।
কিন্তু কেন এত দাম মিয়াজ়াকির? বিশেষজ্ঞদের মতে, মিয়াজ়াকি আমের উৎপাদন বেশ পরিশ্রমের এবং সময় সাপেক্ষ। পাশাপাশি, এই আমের পুষ্টিগুণও অনেক বেশি। এই আমে ক্যানসারের ঝুঁকি কমানোর উপাদানও রয়েছে।