গাছ বাঁচাতে ফোঁটা দিলেন বোনেরা

 চন্দন, ধান-দুর্বা, প্রদীপ নিয়ে গাছের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালেন একদল তরুণী৷ এরপর এক এক করে গাছের সামনে এগিয়ে যান তারা৷ গাছের গায়ে ফোঁটা দিয়ে সবাই ছড়া কাটেন, ‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোটা, যমের দুয়ারে পড়ল………৷’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১৪
Share:

গাছফোঁটা: সবুজ বাঁচাতে জলপাইগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র

চন্দন, ধান-দুর্বা, প্রদীপ নিয়ে গাছের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়ালেন একদল তরুণী৷ এরপর এক এক করে গাছের সামনে এগিয়ে যান তারা৷ গাছের গায়ে ফোঁটা দিয়ে সবাই ছড়া কাটেন, ‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোটা, যমের দুয়ারে পড়ল………৷’’

Advertisement

সবুজ রক্ষায় গাছকেই ভাই হিসাবে ফোঁটা দিলেন জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালের নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রীরা৷ হাসপাতালের ভেতরে নার্সিং ট্রেনিং স্কুল চত্বরেই তাদের এই এই ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিল ‘সমাজ ও নদী বাঁচাও কমিটি’ নামের একটি সংগঠন৷ সংগঠনের কর্ণধার সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গাছ রয়েছে বলেই আমরা রয়েছি৷ তাই আমাদের বেঁচে থাকার স্বার্থে ও পরিবেশকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থে গাছকেও বাঁচাতেই হবে৷ তাই এ দিনের এই আয়োজন৷’’

নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রী স্বাগতা দাস ও প্রিয়া বল বলেন, ‘‘এই দিনটায় আমরা যেমন ভাইয়ের দীর্ঘ জীবন কামনা করি, তেমনি আমরা চাই এই দিন সকলেই গাছেরও দীর্ঘায়ু কামনা করুন৷ বন্ধ হোক সবুজ ধ্বংস৷ কারণ গাছ না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে৷ আমরা কেউই আর থাকব না৷ তাই আমরা চাই, গাছ না কেটে সকলে বেশি করে গাছ লাগান৷’’ এ দিন নার্সিং ট্রেনিং স্কুল চত্বরে জগদীশ চন্দ্র বসু, প্রফুল্ল চন্দ্র রায়, বিধানচন্দ্র রায়দের নামে বিভিন্ন গাছের নামকরণ করা হয়৷ পাশাপাশি বৃক্ষরোপনও করা হয়৷ নার্সিং ট্রেনিং স্কুলের ছাত্রীদের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান জলপাইগুড়ির সিএমওএইচ জগন্নাথ সরকার৷

Advertisement

ভাইফোঁটাকে ঘিরে এ দিন সম্প্রীতির ছবিও ধরা পড়ল জলপাইগুড়িতে৷ এ দিন দুপুরে সম্প্রীতির ভাইফোঁটার আয়োজন করেছিল পাণ্ডাপাড়া কালীবাড়ি নবীন সংঘ ও পাঠাগার এবং তৃণসাথী ক্লাব৷ সেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ ভাইফোঁটায় অংশ নেন৷ নবীন সংঘ ও পাঠাগারে বাড়তি আকর্ষণ আবার ছিল কোরক হোমের আবাসিকরা৷ এ দিন ভাইফোঁটায় ওই হোমের ৮৬ জন আবাসিককে ফোঁটা দেন পাড়ার মেয়েরা৷ ফোঁটা নিয়ে সেই দিদি বা বোনের হাতে উপহার হিসাবে নিজেদের হাতে আঁকা কার্ড, টিপের পাতা ও চুলের ক্লিপ দেয় খুদে আবাসিকরা৷ ফোঁটা নেওয়ার পর ক্লাব চত্বরেই ছিল তাদের খাবার ব্যবস্থা৷ যেখানে ভাত, ডাল, সব্জি ও পাঠার মাংসের পাশাপাশি ছিল দু’ ধরণের মিষ্টিও৷ ক্লাবের সম্পাদক অভিজিৎ দাস বলেন, ‘‘একদিকে সম্প্রীতি ও অন্য দিকে ভাইফোঁটায় হোমের আবাসিকদের সামিল করতে পেরে খুশি৷’’ হোমের সুপার প্রণয় দে বলেন, ‘‘আবাসিকরা সকলেই পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন৷ ফলে এ ধরণের সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে ওরা অনেক কিছু শিখতে পারে৷’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement