বাড়ির সামনে রোজ রাতেই এক দল যুবক আড্ডা দেয়। আড্ডায় চলে মদ। মোটরবাইকে করে আসা-যাওয়া করে তারা। তার শব্দ রাত পর্যন্ত শুনতে হয়। সেই সঙ্গে খোলা গলায় গালিগালাজ। সেই সব কথাও ঘরে চলে আসত।
তা অসহ্য হয়ে ওঠায় ওই এলাকারই বাসিন্দা এক মহিলা তার প্রতিবাদ করেন। সেই রাগেই ওই আড্ডার কয়েকজন তাঁর বাড়িতে চড়াও হয় বলে অভিযোগ। তাঁকে যৌন নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর কলেজ পড়ুয়া ছেলে বিপ্লব এবং এক আত্মীয়কে মারধর করা হয়।
বিপ্লব জানান, ‘‘বাড়ির ভিতরে ঢুকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে বলে। মা’কেও মারধর করে। শাড়ি ছিঁড়ে যায়। অসুস্থ কাকাকেও মারধর করা হয়েছে।’’ চিৎকার চেঁচামেচি শুরু প্রতিবেশীরা বেরিয়ে এলেই অভিযুক্তরা পালায়।
বৃহস্পতিবার রাত ১২টা নাগাদ এনজেপি থানার শিলিগুড়ির শক্তিগড় এলাকায় ওই যুবকদের বিরুদ্ধে গোটা পাড়াই এককাট্টা হয়েছে। অভিযুক্তরা পরিবারটিকে মারধর শুরু করলে স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন। ধাক্কাধাক্কিতে দু’জন বাসিন্দার হাতে চোট লাগে। পুলিশ এসে দু’জনকে গ্রেফতার করে। বাকি ৬-৭ জন যুবক বাইক নিয়ে পালিয়ে যায়। রাত থেকে তাদের খোঁজ শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) গৌরব লাল বলেন, ‘‘পুলিশ সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছে। কোনও দাদাগিরি বা সমাজবিরোধী কাজ মেনে নেওয়া হবে না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম বরকত আলি এবং শুভজিৎ রায়। এদিন তাদের জলপাইগুড়ি আদালতে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে বরকতের নামে পুরোনো বাইক চুরি, মারপিট-সহ একাধিক মামলাও রয়েছে। ধৃতদের আদালতে পাঠানোর সময় তারা অবশ্য অভিযোগ ঠিক নয় বলে দাবি করে। তাদের দাবি, ‘‘বাইক দাঁড় করানো নিয়ে বচসা হয়। কারও মারধর করা হয়নি।’’
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শক্তিগড় ৫ নম্বর রোডে একেবারে শেষ প্রান্তে প্রতিদিন রাত হলেই একদল যুবকের বাইক নিয়ে আড্ডা শুরু করে। ২-৩ জন ছাড়া সবাই বহিরাগত। প্রয়োজন হলেও মহিলারা এলাকা দিয়ে রাতে যাতায়াত করতে চান না। প্রতিবাদ করলে উল্টে হুমকি দেওয়া হয়। মাস তিনেক আগে স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর দীপা বিশ্বাস এবং পুলিশকে সব জানান হয়। পুলিশ ভ্যান সন্ধ্যায় পর ঘোরাঘুরি শুরু করায় আড্ডা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি তা আবার শুরু হয়েছিল।
সত্য দাস, দেবব্রত ভাদুড়ি’র মতো বাসিন্দারা জানান, ওই যুবকদের বয়স ২০-২৫ বছরের মতো। মোটরবাইক নিয়ে মস্তানি করে বেড়ায়। পুলিশ-প্রশাসনের উচিত আরও কড়া পদক্ষেপ করা।