ফাইল চিত্র।
আকাশে ‘প্লেন’ উড়ে যাওয়ার শব্দ পেলেই ছুট দেয় সবাই। ছুটতে ছুটতে মাঠের কিনারে দাঁড়িয়ে বলে, “আজ বুঝি প্লেন নামবে। চল প্লেন দেখতে যাই।” প্লেন নামে না। উড়ে যায় আর এক আকাশে।
হাঁফ ছেড়ে মাঠ থেকে বাড়ি ফেরে কিশোরের দল। মন খারাপ হয় তাঁদের। আশা নিয়ে থাকে। বলে, “দেখিস ঠিক একদিন নামবে।” শুধু কিশোরেরা নয়, বিমানের আশায় দিন গুণছে কোচবিহারের তরুণ, প্রৌঢ়, বৃদ্ধ সকলেই। তবে কোচবিহারে ঠিক কবে নামবে প্লেন, জানে না কেউই। জানবার কথাও নয়, নেতা-মন্ত্রী প্রশাসনিক কর্তারা বার বার শুধু ধারনার কথা জানাচ্ছেন। কেউ বলছেন, সময়সূচি ঠিক হয়েছে। কেউ জানান, সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যে উড়ান শুরু হবে কোচবিহার-কলকাতা। কেউ ওই সময় বাড়িয়ে বলছে সম্ভবত এক মাস।
বাসিন্দাদের অনেকেই ক্ষোভে বলেন, “কোচবিহারের বিমানবন্দর নিয়ে আসলে একটা ‘তামাশা’ চলছে। যার যা খুশি একটা বলে দিচ্ছেন। দায় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে মানুষকে বোকা বানানোর কোনও মানে হয় না।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অবশ্য দাবি করেছেন, উড়ান চালু হওয়ার ব্যাপারে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে। খুব শীঘ্রই ওই বিমান চলাচল শুরু হবে। দিন দশেক আগে তিনি জানিয়েছিলেন, সম্ভবত এক সপ্তাহের মধ্যে বিমান চলাচল শুরু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, “তেমনই সম্ভাবনা ছিল। তা পিছিয়ে গিয়েছে।” তৃণমূলের সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়ও কিছুদিন আগে বিমানবন্দর পরিদর্শন করে জানিয়েছিলেন, খুব শীঘ্রই উড়ান চালু হচ্ছে। তিনি বলেন, “ওই ব্যাপারে রাজ্য সরকার উদ্যোগী হয়েছে। এখনও বলছি খুব দ্রুত উড়ান পাচ্ছি।”
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিমান কবে থেকে নামবে, তা নিয়ে সঠিক কোনও তথ্য জানাননি। এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, সম্প্রতি এয়ার ডেকান কর্তৃপক্ষ উড়ান চালুর ব্যাপারে সম্ভাব্য সময়সূচি পাঠিয়েছে কোচবিহার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে। তাতে বলা হয়েছে, কলকাতা থেকে প্রতিদিন ১৮ আসনের বিমান বিকাল ৪ টায় কোচবিহার বিমানবন্দরে অবতরণ করবে। ফের সেটি সরাসরি ৪ টা ২০ মিনিটে কলকাতার উদ্দেশে রওনা হবে। কোচবিহার ডিসট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সম্পাদক রাজেন বৈদ বলেন, “ইতিমধ্যেই খুব দ্রুত বিমান চালুর দাবি করে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রীকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আমরা এখনও আশা করছি বিমান চালু হবে।” ফোসিনের সদস্য রানা গোস্বামী বলেন, “কোচবিহার-কলকাতা বিমান অত্যন্ত জরুরি। অপেক্ষায় বসে আছি।” রাজ আমলে কোচবিহারে বিমান চলাচল হত। তার পর বহু বছর তা বন্ধ। ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর বিমান চলাচল শুরু হলেও মাস খানেকের মধ্যে ফের তা বন্ধ হয়ে যায়।