পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিং। —নিজস্ব চিত্র।
কালিম্পং ও দার্জিলিঙের পরে কার্শিয়াংয়ে প্যারাগ্লাইডিং চালুর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। জিটিএ সূত্রের খবর, কার্শিয়াংয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে এটি চালু করার জন্য নজরদারি চলছে। গিদ্দা পাহাড় থেকে রোহিণী অবধি প্রথম বার প্যারাগ্লাইডিং চালুর চেষ্টা শুরু হয়েছে। এর আগে, দার্জিলিঙের বিজনবাড়িতেও প্যারাগ্লাইডিং চালু করা হয়েছিল। তবে আবহাওয়া, পরিকাঠামোর সমস্যায় তা বন্ধ থাকছে। কালিম্পংয়ের ডেলোই এত দিন পাহাড়ি দুই জেলার এক মাত্র প্যারাগ্লাইডিং করার জায়গা ছিল। এ বার তাতে জুড়তে চলছে কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়।
জিটিএ পর্যটন দফতরের একজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর সোনম ভুটিয়া বলেন, ‘‘কার্শিয়াংয়ের গিদ্দা পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিংয়ের অনুমতি চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। জিটিএ, পর্যটন দফতরের তরফে খুঁটিনাটি সব দেখা হচ্ছে। সরঞ্জাম থেকে পর্যটকদের নিরাপত্তার দিকটি দেখে ছাড়পত্র দেওয়া হবে।’’
কালিম্পংয়ের পেডং ও ডেলোয় প্যারাগ্লাইডিং অত্যন্ত জনপ্রিয়। এর পরেই রয়েছে তিস্তায় র্যাফ্টিং। এ ছাড়া, সিঙ্গালিলা জাতীয় উদ্যান ও নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রেকিং জনপ্রিয়। দার্জিলিঙের জামুনি এবং বিজনবাড়িতেও অ্যাডভেঞ্চার পর্যটনের কাজ চলছে। সেখানেও একাধিক পেশাদার সংস্থার পর্যটকদের জন্য অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের ব্যবস্থা করে। এ ছাড়া, দার্জিলিঙের চটকপুরে মাউন্টেন বাইকিং করার ব্যবস্থা রয়েছে। সিঙ্গালিলা এবং সান্দাকফু বরাবর ট্রেকিংয়ের জন্য বিখ্যাত। প্রতি বছর দেশবিদেশের বহু পর্যটক পাহাড়ে অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টসের টানে আসেন। তবে প্যারাগ্লাইডিং বহু বছর ধরে কালিম্পংয়ে চলছে।
গত কয়েক বছরে প্যারাগ্লাইডিং এবং র্যাফ্টিং দুর্ঘটনায় পর্যটকদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। বিপাকে পড়েছেন বহু পর্যটক। আবহাওয়ার জেরেই পর পর ঘটনাগুলি ঘটেছে। সেই সঙ্গে প্রশাসনিক নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পেশাদার সংস্থা, উন্নত মানের সরঞ্জাম, প্রশিক্ষিত গাউডদের বিষয়টিও বার বার সামনে এসেছে। পুজোর আগে, দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ি এলাকায় চালু হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম। পর্যটক নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বর্ষার মরসুমে তিন মাস বন্ধ রাখা হয়েছিল সমস্ত ধরনের অ্যাডভেঞ্চার টুরিজ়ম। জিটিএ সূত্রের খবর, গত ১৫ জুন থেকে দার্জিলিং ও কালিম্পং— দুই জেলার পাহাড়ে প্যারাগ্লাইডিং, র্যাফ্টিং, ক্যাম্পিং, ট্রেকিংয়ের মতো সমস্ত কিছুই বন্ধ রাখা ছিল। সেপ্টেম্বরে চালু হয়েছে। চালু হওয়ার পরেই কার্শিয়াংয়ের আবেদন জমা পড়েছে।
রাজ্য পর্যটনের অ্যাডভেঞ্চার টুরিজমের টাস্ক ফোর্সের অন্যতম কর্তা সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘পর্যটক নিরাপত্তার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিয়ে দেখে জনপ্রিয় পরিষেবাগুলি চালু করতে হবে।’’