সমস্যায়: জলের জন্য লাইন ট্যাঙ্কারে। নিজস্ব চিত্র
পাইপলাইন সরানোর কাজ শেষ করে শনিবার রাতেই জলাধারগুলিতে জল ভরা হল। রবিবার সকাল থেকেই পরিকল্পনা মাফিক শিলিগুড়ি শহরে জল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে জানালেন শিলিগুড়ি পুর কর্তৃপক্ষ।
মেয়র অশোক ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘এশিয়ান হাইওয়ের কাজের জন্য পরিকল্পনা মাফিক তিনবাত্তি এলাকায় পাইপলাইন সরানোর কাজ শেষ হয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই স্বাভাবিক নিয়মে জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে এই কয়েকদিন জল সরবরাহ আমরা করতে পেরেছি। কোথাও বড় কোনও সমস্যা হয়নি।’’
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এই কাজের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের আধিকারিকদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘এই প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও সারারাত জেগে গত কয়েকদিন কাজ করেছেন জন স্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতরের আধিকারিক-কর্মীরা। মানুষের জন্য কষ্ট স্বীকার করেছেন। তাঁদের ধন্যবাদ।’’ তাঁর দাবি, পুরসভা বাম জমানায় ফুলবাড়ি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট থেকে শিলিগুড়ি শহরে পানীয় জল সরবরাহের যে প্রকল্প করেছে তাতে বিকল্প পাইপলাইন না করার জন্যই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। পাইপলাইন খারাপ হলে বা ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের সংস্কার কাজ করতে গেলে জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হবে।
বস্তুত, পাইপ সরানোর কাজের জন্য ৩-৬ জানুয়ারি চার দিন জল সরবরাহ বন্ধ রাখার কথা জানানো হয়েছিল। সেই মতো যুদ্ধকালীন তৎপরতায় তিনবাত্তি এলাকায় পাইপ লাইন সরানোর কাজ হয়। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে কর্মী সংখ্যা বাড়ায় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। পাইপ সরিয়ে শুক্রবার রাতের মধ্যেই কাজ শেষ করে তারা। পাইপের সংযোগগুলি কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে গেঁথে দেওয়া হয়। হাতে একদিন বাড়তি সময় রাখা হয়েছিল। সেই মতো শনিবার ‘ট্রায়াল রান’ করে পাইপের সংযোগস্থলগুলোতে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না দেখেও নেওয়া হয়।
বুধবার সকালে এক ঘণ্টার জন্য পরিষেবা দিয়ে পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল ওই কাজের জন্য। বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে শহরের বাসিন্দাদের কাছে ঠিক মতো জল পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে কি না তা সরেজমিনে দেখতে আলাদা ভাবে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব, মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে খোঁজখবর করেন গত দুই দিন ধরেই।
শনিবারও বিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। বেলা ১১টার মধ্যে এ দিন ফুলবাড়ি প্ল্যান্ট থেকে ১৮টি গাড়ি, ঝঙ্কার মোড় থেকে ২৪টি, শক্তিগড় এলাকা থেকে ১২টি এবং বাঘা যতীন কলোনির নলকূপ থেকে অন্তত ৫টি গাড়ি জল ভরে বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। বিকেলেও গাড়ি পাঠানো হয়েছে বিভিন্ন ওয়ার্ডে। ৪, ২২, ২৯, ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে পুরসভার কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জলের পাউচ চাওয়া হয়। সেই মতো পাঠিয়েও দেওয়া হয়।