ফাইল চিত্র।
যে দিন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা রাজ্যের বর্তমান শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সিবিআই দফতরে হাজিরা দিতে গেলেন, ঠিক সেই দিনই, বুধবার শিলিগুড়ি থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন এসএসসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য।
বুধবার শিল্পমন্ত্রী নিজাম প্যালেসে ঢোকার আগেই সুবীরেশ ভট্টাচার্য বাগডোগরা থেকে উড়ানে রওনা হলেন। তাঁর নাম ইতিধ্যেই আর কে বাগ কমিটির রিপোর্টে রয়েছে। ঠিক এই সময়ই কেন কলকাতা গেলেন তিনি, তা নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। কেউ বলছেন, এর পরেই ডাক পড়তে পারে এসএসসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশের। তবে উপাচার্যের ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, শিক্ষা দফতরে তাঁর কাজ রয়েছে। ফোন করা হলেও তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। কেউ ধরেননি। মেসেজ করা হলেও উত্তর মেলেনি।
এসএসসি’র গ্রুপ-ডি, গ্রুপ-সি এবং শিক্ষক নিয়োগের মামলায় ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে। হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে প্রাক্তন বিচারপতি আর কে বাগের কমিটির দেওয়া রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ৩৮১টি ভুয়ো নিয়োগ হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেননি বলে অভিযোগ। সম্প্রতি কমিটির রিপোর্টে জড়িতদের নামের যে তালিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি, এসএসসি’র চেয়ারম্যানদের সঙ্গে এসএসসি’র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নামও রয়েছে। তা নিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন চলছে। এ দিন উপাচার্য কলকাতায় রওনা হওয়ায় সেই জল্পনা আরও বেড়েছে। অনেকেই নানা সন্দেহ করছেন। তবে অপর একাংশের দাবি, আজ, ১৯ মে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে উপাচার্যদের বৈঠক রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অনলাইন, না অফলাইনে হবে, সেইসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়েও সরব হয়েছে বিজেপির মতো রাজনৈতিক দল। নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে মামলাও চলছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির তরফে নানা অনিয়মের আশঙ্কা নিয়ে উপাচার্যের কাছে ইতিমধ্যেই একাধিকবার লিখিত উত্তর চাওয়া হয়েছে। উপাচার্য তা না জানানোয় গত ১১ মে শিক্ষক সমিতির বৈঠকে তা নিয়েও আলোচনায় হয়। শিক্ষক সমিতির একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, সেখানে সিদ্ধান্ত অনুসারে উপাচার্যের কাছে শীঘ্রই ওই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর সম্বলিত শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানানো হবে। শিক্ষকদের একাংশের আশঙ্কা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের জমি বেসরকারি সংস্থার কাছে লিজে দেওয়া হবে।
উপাচার্য যদিও এর আগে তা অস্বীকার করেছেন। বিধি ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্ম সমিতি, ফিনান্স কমিটিতে সদস্য নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। পেনশন তহবিলের টাকা অন্য কাজে ব্যবহারের চেষ্টা হচ্ছে বলেও তাদের আশঙ্কা। শিক্ষক সমিতির একাংশ জানান, উপাচার্যের কাছ থেকে শ্বেতপত্রে ওই সমস্ত প্রশ্নেরই জবাব তাঁরা চাইবেন।