ফাইল চিত্র।
পেঁয়াজের দামের ঝাঁঝে হাত পুড়ছে গৃহস্থের। জেলা সদরের বাজারগুলির চেয়ে গ্রামীণ এলাকার বাজারে দাম আরও চড়া। শুধু পেঁয়াজই নয়, গত কয়েকদিনে টোম্যাটো থেকে শুরু করে পটল, সমস্ত আনাজের দামই একলাফে অনেকটা বেড়ে গিয়েছে। মালদহ জেলায় এখনও বন্যা হয়নি, এমনকী বৃষ্টিপাতও প্রয়োজনের তুলনায় ৩০ শতাংশ কম রয়েছে বলে কৃষি দফতর জানাচ্ছে। তাহলে আনাজের দাম একলাফে অনেকটা বাড়ল কেন? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে বাসিন্দাদের মধ্যে।
গত সপ্তাহেই মালদহের রথবাড়ি বাজার, চিত্তরঞ্জন বাজার, মকদমপুর বাজার, গৌড়রোড বাজার, ঝলঝলিয়া বাজার-সহ জেলা সদরের অন্য বাজারগুলিতে পেঁয়াজ বিকোচ্ছিল ২০ থেকে ২৪ টাকা কেজির মধ্যে। কিন্তু গত তিন-চারদিনের মধ্যেই সেই পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা কেজি ছুঁয়েছে। জেলার চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, গাজোল, রতুয়া, মানিকচক, বামনগোলা, হবিবপুর, কালিয়াচক, মোথাবাড়ি, বৈষ্ণবনগর প্রভৃতি বাজারগুলিতে সেই পেঁয়াজেরই দাম ৪৫ টাকা কেজি।
অন্য আনাজের একই অবস্থা। পটল কেজিপ্রতি ৩০ টাকা, ঝিঙে ২৫-২৮ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়ো ৪০ টাকা হয়েছে। টোম্যাটোর দামও ৫০ টাকা থেকে বেড়ে একলাফে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে রথবাড়ি বাজারে আনাজ কিনতে গিয়েছিলেন সর্বমঙ্গলাপল্লির বিজন সরকার। তিনি বলেন, ‘‘দাম শুনে আমার তো মাথায় হাত।’’ একই অভিজ্ঞতা রামকৃষ্ণপল্লির শর্বরী দাস বা মহেশমাটির রীতা মজুমদারের।
কিন্তু বন্যা না হলেও এমন হাল কেন? ইংরেজবাজার পাইকারি বাজারের ফ্রুটস অ্যান্ড ভেজিটেবল কমিশন এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজকুমার প্রসাদ জানাচ্ছেন, বর্ধমান, নদিয়া ও হুগলি থেকে যে পেঁয়াজ মালদহে আসত সেটা দক্ষিণবঙ্গের বন্যার কারণে আসা বন্ধ হয়েছে। এখন মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে পেঁয়াজ আসছে। নাসিকেই এখন পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পরিবহণ খরচ, লোড-আনলোড, সর্টিং এ সব দিয়ে মালদহেই পেঁয়াজের দাম পাইকারি পড়ছে ৩৭ টাকা কেজি। ফলে খোলা বাজারে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি করতেই হবে। তিনি বলেন, ‘‘নাসিকের পেঁয়াজই এখন ভরসা। যা পরিস্থিতি পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে।’’ একই মত মালদহ মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক উজ্জ্বল সাহারও।
তাছাড়া জেলার গ্রামীণ এলাকায় ভালো বৃষ্টির জেরে আনাজের আমদানি পাইকারি বাজারে কমেছে। তাই পেঁয়াজের মতো সেগুলিরও দাম চড়ছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আনাজের মাত্রাতিরিক্ত দাম বেড়ে যাওয়া নিয়ে এখনও কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’