অজয় এডওয়ার্ড। —ফাইল চিত্র।
আগামী লোকসভা ভোটে পাহাড়ের শাসক বা বিরোধী কোন পক্ষে তারা থাকবে, তা নিয়ে সমাজ মাধ্যমে চলছে নানা জল্পনা। নিজেরাই লড়বেন না কি, নতুন কোনও ফ্রন্টে যোগ হবেন, তা নিয়েও চর্চা অব্যাহত। এর মধ্যেই বড়দিনে, সোমবার হামরো পার্টির তরফে জানানো হল, গোর্খা জাতির উন্নতির কথা মাথায় রেখেই দল ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের ভূমিকা ঠিক করবে৷
এ দিন ম্যাল চৌরাস্তা লাগোয়া দলের কেন্দ্রীয় দফতরে বৈঠকে বিভিন্ন আলোচনা, চর্চার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা হয়। তার পরেই, দলের তরফে কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ফুতেম্বা ভুটিয়া দলের আপাত অবস্থান স্পষ্ট করেন। দলের শীর্ষ নেতা অজয় এডওয়ার্ড অবশ্য বিষয়টি নিয়ে এ দিন মুখ খোলেননি। ফুতেম্বা বলেন, ‘‘লোকসভা ভোট আসছে, আর তার আগে হামরো পার্টিকে নিয়ে নানা বক্তব্য, মন্তব্য, কল্পনা বাজারে আনা হচ্ছে। এর কোনও সত্যতা নেই। আমাদের দলের তরফে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় কমিটি নেবে। সময় মতো তা গোর্খাদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ঘোষণা করা হবে।’’
দলীয় সূত্রের খবর, জিটিএ পুরসভা ভোটে একা লড়লেও, গত পঞ্চায়েত ভোটে হামরো পার্টি বিজেপি নেতৃত্বধীন জোটে যোগ দেয়। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোটে গেরুয়া জোটের শোচনীয় ফলের পরে, অজয় এডওয়ার্ড সে জোট থেকে দূরত্ব বাড়িয়ে তোলেন। বিজেপির স্থানীয়, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়ে তিনি পাহাড়ের সমস্যা কেন মেটানো হচ্ছে না, সেই প্রশ্নও তোলেন। পরে, তিনি বিজেপির পাশে নতুন করে লোকসভা ভোটের সময় যাবেন কি না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। এর মধ্যেই বিনয় তামাং কংগ্রেসে যোগ দিয়েই পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলির সাহায্য চেয়েছেন। অন্য দলগুলির সঙ্গে তিনি অজয়কেও
চিঠি দিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে হামরো পার্টির অবস্থান নিয়ে আলোচনা চলছে। পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার পরে, মূলত হামরো পার্টি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং জিএনএলএফের এখনও কিছু এলাকায় সংগঠন এবং লোকবল রয়েছে। তাই এদের সমর্থন নিয়ে টানাপড়েন চলছে। লোকসভার শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়েছে। তাই নতুন করে পাহাড়ের দাবিদাওয়া আর এ বার মিটবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা মোকাবিলা করতে বিজেপি কী করবে, সেটাও পরিষ্কার নয়। পাহাড়ের নেতারা মনে করছেন, বিজেপির প্রতিশ্রুতিতে আর খুব একটা কাজ হবে না। তাই বিজেপির বিরুদ্ধে শাসক দল ছাড়াও, আর একটি নতুন ফ্রন্ট ময়দানে আসতে পারে। তাতে হামরো পার্টি কী ভূমিকা নেবে, সেটাও দেখার।
হামরো পার্টির কেন্দ্রীয় নেতাদের একাংশ মনে করছেন, পাহাড়ের দলগুলি আঞ্চলিক দল। দলের প্রার্থী নিয়ে প্রচার করা যেতেই পারে। কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ হবে না। সেখানে জাতীয় রাজনীতিতে যোগাযোগ রাখতে গেলে, অন্য রকম ভাবতে হবে। নতুন বছরের শুরুতে দলের অবস্থান মোটামুটি পরিষ্কার হবে।