কোথাও জাতীয় সড়কের উপরে আলু ছড়িয়ে অবরোধ করা হল। কোথাও আবার পথসভা ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হল। সরকারি সহায়ক দরে আলু কেনা ও দাবি মতো হিমঘরে আলুর বন্ড দেওয়ার দাবিতে শনিবার দিনভর সিপিএমের কৃষক সভার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল দুই দিনাজপুর ও মালদহের বিভিন্ন এলাকায়। তিন জেলার প্রশাসনের অবশ্য দাবি, কৃষকসভার দাবি পূরণের বিষয়টি রাজ্য সরকারের এক্তিয়ারভুক্ত। আলুর কালোবাজারির কোনও প্রমাণ মেলেনি।
উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের জয়হাটের চেকপোস্ট এলাকায় এ দিন মিছিল ও পথসভা করার পরে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে আলু ছড়িয়ে বেশ কিছু ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান কৃষকসভার সদস্যরা। একই ভাবে, রায়গঞ্জের পানিশালা, ইসলামপুরের দাড়িভিট, মাদারিপুরে সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষোভ ও ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া ও রসাখোয়ায় আলু ফেলে দীর্ঘ ক্ষণ রাজ্য সড়ক অবরোধের জেরে যানজটের সৃষ্টি হয়।
অন্য দিকে, দক্ষিণ দিনাজপুরের আটটি ব্লকে বিভিন্ন এলাকায় কোথাও পনেরো মিনিট, কোথাও আবার আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কৃষকসভার সদস্যেরা রাজ্য সড়ক অবরোধ, পথসভা ও বিক্ষোভ করেন। গঙ্গারামপুরের ফুলবাড়িতে ছিলেন কৃষকসভার জেলা নেতা শীতেশ গুহ, মানবেশ চৌধুরীরা। মালদহের হবিবপুর ব্লকের কেন্দপুকুরে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কে কৃষকসভার সদস্যদের আলু ফেলে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা চরমে ওঠে। ঘণ্টাখানেক ধরে ওই আন্দোলন চলে। পরে, পুলিশ আন্দোলনকারীদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
কৃষকসভার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সম্পাদক সাকিরুউদ্দিন আহমেদ বলেন, “রাজ্য সরকার সরকারি সহায়ক দরে আলু কিনছে না। ফলে, চাষিরা প্রতি কুইন্টাল তিনশো-চারশো টাকা দরে অভাবি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। আলু চাষিরা লোকসানে পড়ছেন।”
তিন জেলার প্রশাসনেরই দাবি, হিমঘরগুলোর বেশির ভাগই বেসরকারি। পরিকাঠামো অনুযায়ী তারা ঠিক করে কত পরিমাণ আলু মজুত করা যাবে, কত জন কৃষককেই বন্ড দেওয়া হবে। তা ছাড়া সহায়ক দর নিয়ে স্পষ্ট সরকারি নির্দেশিকা এখনও প্রশাসনের কাছে আসেনি বলে দাবি।
কৃষকসভার উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি উত্তম পালের অভিযোগ, রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কৃষক বিরোধী নীতির জেরে চাষিরা হিমঘরে আলু রাখার সুযোগ পাচ্ছেন না। খুব কম পরিমাণ আলুর বন্ড দেওয়া হচ্ছে। ফলে, চাষিদের কাছ থেকে কম দামে আলু কেনার জন্য সর্বত্র ফড়েরা সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, “অবিলম্বে চাষিদের কাছ থেকে সরকারি উদ্যোগে প্রতি কুইন্টাল এক হাজার টাকা দরে আলু কেনা ও হিমঘরে পর্যাপ্ত আলুর বন্ড দেওয়া না হলে, আমরা চুপ করে বসে থাকব না।”