ছাত্রী মৃত্যুতে নয়া মোড়। প্রতীকী চিত্র।
নতুন দিকে মোড় নিল মালদহের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা। দুই বান্ধবীর মধ্যে সমকামিতার সম্পর্কে বাধা পেয়েই কি আত্মঘাতী হয়েছিল ওই ছাত্রী? এমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে মৃত কিশোরীর বান্ধবী এবং তাঁর বাবার বক্তব্য। মৃত ছাত্রীর ফেসবুক মেসেঞ্জারে পাঠানো বার্তাতেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। যদিও সমকামিতার সম্পর্কের তত্ত্ব পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছে মৃত ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।
গত ১ ডিসেম্বর মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে উদ্ধার হয়েছিল দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ। ওই ঘটনায় মেয়ের বান্ধবীর বাবার বিরুদ্ধে হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে মৃত ছাত্রীর পরিবার। সেই ঘটনার তদন্তে উঠে এসেছে নয়া তত্ত্ব। মৃত ছাত্রীর বান্ধবী জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করার চেষ্টাও করেছিল। মৃত ছাত্রীর বান্ধবীর কথায়, ‘‘আমরা একই ক্লাসে পড়তাম। দু’বছর আগে ওর সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল। আমাদের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মতো সম্পর্ক ছিল দু’বছর ধরে। মাস তিনেক আগে ও আমাকে এক যুবকের সঙ্গে কলকাতায় পাঠিয়ে দিয়েছিল। সেখানে দমদমে গার্লস হস্টেলে ছিলাম। সেখান থেকে আমার বাবা খুঁজে নিয়ে আসে। এর মাঝে স্নেহার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিল না।’’
ঘটনাচক্রে কলকাতা থেকে মেয়েকে মালদহে ফিরিয়ে আনার পর তাঁকে বিহারের আজমনগরের এক আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন মৃত কিশোরীর বান্ধবীর বাবা। এর পর দুই ছাত্রীর মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। মৃত কিশোরীর বান্ধবীর বাবার কথায়, ‘‘ওদের মধ্যে ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। ওরা দরজা বন্ধ করে একঘরে থাকত। আমরা জানতাম না যে, মেয়েদের মধ্য়েও প্রেম ভালবাসা হয়।’’
সম্প্রতি ফেসবুক মেজেঞ্জারে দুই বান্ধবীর কথোপকথনের তথ্য এবং কিছু ছবি পুলিশের হাতে এসেছে। যা দেখে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, দু’জনের মধ্যে সমকামিতার সম্পর্ক ছিল। মালদহ জেলার পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, মৃত কিশোরীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। তার পর বিষয়টি স্পষ্ট হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
যদিও, মৃত ছাত্রীর পরিবার সমকামিতার তত্ত্ব মানতে নারাজ। মৃত কিশোরীর কাকা বলেন, ‘‘দুই বান্ধবীর মধ্যে যে সম্পর্কের কথা বলছে ওরা তা আমরা জানতাম না। এই নিয়ে আমাদের কোন ধারণাও নেই। জীবনে তা শুনিওনি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘ওর বান্ধবী একটি ছেলের সঙ্গে পালিয়ে গিয়েছিল। যার জন্য তার বাবা আমাদের মেয়েকে দোষারোপ করত। ওকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল। এমনকি ১১ লক্ষ টাকাও দাবি করেছিল। এর পর আমাদের সন্দেহ হয়।’’ মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে তাঁর ভাইঝি আত্মঘাতী হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।