ট্রেজারির কর্তার মৃত্যু

 এক ট্রেজারি আধিকারিকের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধল জলপাইগুড়িতে৷ বুধবার গভীর রাতে জলপাইগুড়ি কম্পোজিট কমপ্লেক্সে সরকারি আবাসন থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ ওই আবাসনে স্ত্রীকে নিয়েই থাকতেন ট্রেজারি আধিকারিক৷

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:০৭
Share:

মৃত: অস্বাভাবিক মৃত্যু সরকারি কর্তা নাদির শাহের। নিজস্ব চিত্র

এক ট্রেজারি আধিকারিকের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধল জলপাইগুড়িতে৷ বুধবার গভীর রাতে জলপাইগুড়ি কম্পোজিট কমপ্লেক্সে সরকারি আবাসন থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়৷ ওই আবাসনে স্ত্রীকে নিয়েই থাকতেন ট্রেজারি আধিকারিক৷ প্রতিবেশীদের অভিযোগ, মাঝে মধ্যেই স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত৷ তবে ওই কারণেই এই আত্মহত্যা কি না, তা স্পষ্ট নয়৷ এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের না হওয়ায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ৷

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম নাদির শাহ (২৮)৷ বাড়ি কলকাতার বড়বাজার এলাকায়৷ ট্রেজারি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত এক বছর থেকে জলপাইগুড়ি ট্রেজারি-১ এ সহকারী ট্রেজারি আধিকারিক হিসাবে কর্মরত ছিলেন৷ জলপাইগুড়ির আগে বহরামপুরে ছিলেন তিনি৷ জলপাইগুড়িতে কমপোজিট কমপ্লেক্সের সরকারি আবাসনে স্ত্রীকে নিয়ে থাকতেন তিনি৷

ওই আবাসনের অন্য বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বুধবার রাত একটা-দেড়টা নাগাদ ট্রেজারি আধিকারিকের স্ত্রী আবাসনের অন্যদের ঘরের দরজায় জোরে জোরে ধাক্কা দিতে শুরু করেন৷ তাঁরা বেরিয়ে এলে আধিকারিকের স্ত্রী তাঁদের জানান, তাঁর স্বামী গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছেন৷ আবাসনের বাসিন্দাদের কথায়, তাদের আবাসনেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক থাকেন৷ তিনি ছুটে গিয়ে ট্রেজারি আধিকারিককে পরীক্ষা করেন৷ কিন্তু হাতের পালস পাননি৷ এরপরি তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন৷

Advertisement

এই ঘটনায় কমপোজিট কমপ্লেক্স এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে৷ চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলার প্রশাসনিক মহলেও৷ আবাসন সূত্রের খবর, বছর খানেক আগে নাদির বিয়ে করেছিলেন৷ কিন্তু এই অল্প সময়ের বিয়েতেও তাদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকত৷ আবাসনের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘মনে হয়, তাঁরা একে অপরকে কোনও কারণে সন্দেহ করতেন৷ সে জন্যই এত ঝগড়া করতেন৷’’ আবাসনের বাসিন্দা তপন ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘প্রায় প্রতিদিনই তাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগে ছিল৷’’ আবাসনের আরেক বাসিন্দা সূর্যালী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক সময় দিনের বেলাতে তাঁরা ঝগড়া করছেন, আবার সন্ধ্যা হতেই একসঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে পড়ছেন৷’’ দিন কয়েক আগে গ্যাংটক থেকেও ঘুরে আসেন তাঁরা৷

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ঘটনার পর আপাতত সার্কিট হাউজে রয়েছেন ওই আধিকারিকের স্ত্রী৷ কিন্তু চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি৷ ফোন ধরেননি, এসএমএস-এরও উত্তর দেননি৷ নাদিরের বাবা রাতেই শহরে পৌঁছন। সার্কিট হাউজেও যান। সেখান থেকে দু’জনে জেলাশাসকের দফতরের দিকে যান। পরে সার্কিট হাউজে ফেরেন।

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, এখনও কেউ অভিযোগ দায়ের করেননি৷ তাই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে৷ জেলাশাসক রচনা ভকত বলেন, ‘‘রাতেই এই আত্মহত্যার খবর শুনেছি৷ কিন্তু কী কারণে এই আত্মহত্যা তা জানি না৷

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement