মৃত: চোলাই খেয়ে মৃত দুই ব্যক্তি। নিজস্ব চিত্র
শান্তিপুরে চোলাই মদ খেয়ে মৃত্যুর ঘটনার রেশ না কাটতেই আবার সন্দেহজনক মৃত্যু। এ বারে ফাঁসিদেওয়া থানার বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া লিউসিপোখরির মহম্মদবক্স এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, চোলাইয়ে মৃত্যু বলে সরাসরি কোনও তথ্য এখনও হাতে আসেনি। তবে গ্রামবাসীদের একটি বড় অংশের ধারণা, রাতে চোলাই খাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পড়েন দু’জন। তার পরে মারা যান। কারণ, গ্রামবাসীদের দাবি, ভাঙাচোরা টিনের ঘরে চোলাইয়ের বোতল, প্লাস্টিকের গ্লাস পেয়েছেন তাঁরা। এই সন্দেহে লাগোয়া মধুজোত গ্রামে একাধিক চোলাইয়ের ঠেকে হামলাও চালিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, মৃতদের একজনের নাম বাবলু কর্মকার (৪০)। রাত অবধি অন্যজনের পরিচয় সম্পর্কে পুলিশ নিশ্চিত নয়। পেশায় কাঠমিস্ত্রি বাবলুর স্ত্রী কয়েক বছর আগে তাঁকে ছেড়ে বালুরঘাটে চলে গিয়েছেন। তাঁর ১৩ বছরের ছেলে পাশের বাড়িতে জেঠিমার কাছে থাকে। সম্প্রতি কাজকর্ম ছেড়ে জমিজমা ধীরে ধীরে বেচে দিচ্ছিলেন বাবলু। থাকতেন একাই। বাবলু’র বৌদি সত্যবতী কর্মকার বলেন, ‘‘সারাদিন চোলাই খেত। দেখলেই টাকা আর খাবার চাইত। রাতে কোনও দিন বাড়ি ফিরত, কোনও দিন ফিরত না।’’ মৃতের ভাইপো অভিজিৎ কর্মকার জানান, রাত সাড়ে ১২টা অবধি বাবলু বাড়ি ফেরেননি। সকালে উঠে তিনি দেখেন, বারান্দায় অচেনা লোক মরে পড়ে আছে। তার পরে ঘরে ঢুকে দেখতে পান, কাকাও পড়ে আছেন।
ঘটনার পরে সীমান্ত লাগোয়া মধুজোত এলাকায় একাধিক চোলাই ঠেক ভেঙে দেন ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। তাঁদের কথায়, ‘‘মধুজোত তো চোলাইয়ের মধুভাণ্ড হয়ে গিয়েছে।’’ পরে ফাঁসিদেওয়ার বিডিও প্রণয় মজুমদার বলেন, ‘‘চোলাই জাতীয় মদ খেয়েই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। ব্লক প্রশাসন বিশদে তদন্ত করছে।’’
দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (গ্রামীণ) প্রবীর মণ্ডল বলেন, ‘‘অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।’’ আবগারি দফতরের শিলিগুড়ি মহকুমার এক অফিসার জানান, তাঁরাও ওই এলাকায় একটি টিম পাঠিয়েছেন।
এ দিন বিকেলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে দু’টি দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বাবলুর পেটে ভাল পরিমাণে অ্যালকোহল মিলেছে। অন্য জনের পেটে সামান্য মদ মিলেছে। তবে তাঁর অগ্ন্যাশয়টি পুরোপরি নষ্ট হয়ে গিয়েছে।