উত্তর দিনাজপুরের দুই বাসিন্দা দেশে ফিরে তাঁদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন। —নিজস্ব চিত্র।
গিয়েছিলেন একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। কিন্তু অশান্ত বাংলাদেশে আটকে পড়ে প্রাণ সংশয় হয় কনক দাস এবং তাঁর প্রতিবেশী পার্থ অধিকারীর। মঙ্গলবার প্রাণ হাতে নিয়ে মঙ্গলবার হিলি সীমান্তে অভিবাসন দফতরে পৌঁছেছেন দুই ভারতীয়। নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে দু’জনে জানাচ্ছেন, আর কখনও প্রতিবেশী দেশে যাওয়ার নামই করবেন না।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার ইস্তফা এবং বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অশান্তির খবর মেলে যত্রতত্র। খুন, লুটপাট, ভাঙচুরের মতো একের পর এক হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে চলেছে। ওই পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে যান এ দেশ থেকে বাংলাদেশের বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ থানা এলাকার নারায়ণপুর গ্রামে যাওয়া কনক এবং পার্থ। উত্তর দিনাজপুরের ইটাহারের দুই বাসিন্দার কথায়, ‘‘ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে নদীর ধারে রাতের অন্ধকারে লুকিয়ে ছিলাম। গামছা পরে কোনও রকমে পালিয়ে এসেছি।’’ হিলি সীমান্তে অভিবাসন দফতরে ঢোকার আগে পর্যন্ত দু’জনের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ। দু’জনেই বলেন, ‘‘অতি কষ্টে ফিরতে পেরেছি। আর কখনও বাংলাদেশ যাব না।’’
গত সপ্তাহে উত্তর দিনাজপুরের দুই বাসিন্দা বাংলাদেশে যান। ফেরার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু, রবিবার রাত থেকেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। সেই প্রভাব গিয়ে পড়ে নারায়ণপুর গ্রামেও। রবিবার এবং সোমবার রাত কার্যত বিনিদ্র কেটেছে দু’জনের। তাঁরা বলেন, ‘‘সোমবার সকাল থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা। রাতের দিকে বাড়ি-বাড়ি আক্রমণ শুরু হয়। চোখের সামনেই ভেঙে গুড়িয়ে যেতে দেখলাম বেশ কয়েকটি বাড়ি। বাড়ির মহিলারা প্রাণ বাঁচাতে নদীর দিকে চলে যান। সেখানেই আশ্রয় নেন।’’ তাঁরাও ছিলেন সেখানেই। সকাল হতেই বিভিন্ন প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে ভারতে আসতে পেরেছেন তাঁরা।
মঙ্গলবার সকাল ১১টার পর থেকে হিলি অভিবাসন দফতর খুলে দেওয়া হয়। তাদের তত্ত্বাবধানে আবার দুই দেশের মধ্যে মানুষের যাতায়াত শুরু হয়।
সকাল থেকেই বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য অনেক বাংলাদেশি নাগরিক উপস্থিত হন হিলি আইসিপি-তে। ওপার বাংলায় আটকে থাকা ভারতীয়দের এপারে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।