তালবেতাল: জখম এই দাঁতালটিকে দেখা গেল। বুধবার বক্সার জঙ্গলে নিমাতির কাছে। নিজস্ব সংবাদদাতা
শিকার উৎসব শেষ হতে না হতেই একটি জখম দাঁতাল হাতির সন্ধান মিলল। আর তাতেই চাঞ্চল্য ছড়াল বক্সার জঙ্গল লাগোয়া এলাকায়। বন দফতর সূত্রের খবর, তালবেতাল নামের মস্ত ওই দাঁতালটির লেজের গোড়ায় ও পিছনের ডান পায়ে ক্ষত রয়েছে। কোনও কোনও মহলের আশঙ্কা, তিরের আঘাতে হাতিটি জখম হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তিরের আঘাতে, না কি অন্য কোনও কারণে দাঁতাল হাতিটি এ ভাবে জখম হল, বন দফতরের কাছে এখনও তা স্পষ্ট নয়। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্তারা জানিয়েছেন, জখম হাতিটিকে প্রতি মুহূর্তে নজরে রাখা হচ্ছে।
বন দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার সন্ধেয় আচমকাই নিমতি চা বাগানের কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ওই হাতিটিকে দেখতে পান স্থানীয়েরা। ওই এলাকাটি বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের নিমাতি রেঞ্জের অধীনে। হাতিটি যে সুস্থ স্বাভাবিক নেই, তা তাকে দেখেই বুঝতে পারেন স্থানীয়দের অনেকে। তাঁদের কথায়, দাঁতালটি শরীরের পিছনের দিকটা বারবার করে গাছের সঙ্গে ঘষে যাচ্ছিল। হাতিটির শরীর থেকে তরল জাতীয় কিছু জিনিস নীচে পড়ছিল। কিন্তু তারই মধ্যে অন্ধকার নেমে আসায় মঙ্গলবার হাতিটিকে আর সেখানে দেখা যায়নি।
সূত্রের খবর, বুধবার সকাল হতেই জখম হাতিটির খোঁজে নিমাতি রেঞ্জের আধিকারিক অর্ণব দাসের নেতৃত্বে বনকর্মীরা জঙ্গলে তল্লাশি শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পর ফের জাতীয় সড়কের ধারে তালবেতালকে দেখতে পান স্থানীয়েরা। তল্লাশিতে নামা বনকর্মীদের পাশাপাশি বনকর্তারাও সেখানে ছুটে যান। কিন্তু কয়েক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে তালবেতাল নিমাতি রেঞ্জের পোড়ো ৬ নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলের ভিতরে চলে যায়। তার মধ্যেই বনকর্মী-সহ স্থানীয়েরা দেখতে পান, দাঁতালটির লেজের গোড়া ও পিছনের দিকের ডান পায়ে দু’টি ক্ষত রয়েছে। যা দেখে স্থানীয়দের কেউ কেউ সেটি তিরের আঘাত বলে সন্দেহও করেন।
দোলে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর একটা অংশ এখনও অস্ত্র নিয়ে জঙ্গলে শিকার করেন। এবার সেই উৎসব শেষ হতে না হতেই জখম অবস্থায় এই দাঁতাল হাতিটির সন্ধান মেলায় বিভিন্ন মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
যদিও বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের উপ ক্ষেত্র অধিকর্তা কল্যাণ রাই বলেন, ‘‘জখম হাতির একেবারে কাছে যাওয়া যাচ্ছে না। তাই আঘাতের কারণ বোঝা যাচ্ছে না। তবে আমরা হাতিটির দিকে নজর রাখছি। প্রাকৃতিক নিয়মে হাতিটি সুস্থ হয়ে ওঠে কিনা সেটাও দেখা হচ্ছে। তেমনটা না হলে অন্য ব্যবস্থার কথা ভাবা হবে।’’
বন কর্তাদের একাংশের কথায়, তিরের পাশাপাশি অন্য জঙ্গলের ভেতরে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়েও হাতিটি জখম হতে পারে।