দলীয় নির্দেশের জেরে প্রার্থী হতে না পারলেও অনুগামীদের হতাশা কাটাতে আসরে নামলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব।
বৃহস্পতিবার বেলা ৯ টা নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে দলীয় কর্মীদের নিয়ে হেঁটেই পৌঁছে যান ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। দিন কয়েক আগে এই ওয়ার্ডে তিনি নিজেই প্রার্থী হবেন বলে বেশ কিছু বাড়িতে প্রচারও করেছিলেন। এ দিন অবশ্য প্রচার করেন দলের প্রার্থী মৈত্রেয়ী চক্রবর্তীর হয়ে। এ দিন প্রচারে গৌতমবাবুর সঙ্গে ছিলেন মৈত্রেয়ীদেবী নিজেও। প্রার্থী তালিকা প্রকাশ না করা হলেও মৈত্রেয়ী দেবীকে সঙ্গে নিয়ে এ দিন অতুলপ্রসাদ সরণিতে অন্তত ২৫ টি বাড়িতে ঘুরেছেন মন্ত্রী।
দলের অন্দরে অবশ্য প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে এ দিনও চাপানউতোর অব্যাহত ছিল। বেশ কিছু ওয়ার্ডে ২ থেকে ৩ জনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। সে সব ওয়ার্ডে কারা প্রার্থী হচ্ছেন তা জানতে অনেকেই উদ্বিগ্ন হয়ে রয়েছেন। অনেকের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ রয়েছে। বেলা দেড়টা নাগাদ হিলকার্ট রোডের দলীয় কার্যালয়ে নির্বাচনের ব্যাপারে বৈঠকও করেন। সন্ধ্যায় ফের দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী নিয়ে বৈঠক করেন। গৌতমবাবু বলেন, “আজ, শুক্রবার দুপুরের মধ্যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। কলকাতা রাজ্য নেতৃত্বের কাছ থেকে অনুমোদন মিলেছে। ফের একবার সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে চূড়ান্ত করা হচ্ছে।”
গৌতমবাবু প্রার্থী হচ্ছেন ধরে নিয়েই এতদিন যাবতীয় পরিকল্পনা হচ্ছিল দলের অন্দরে। বুধবারের পর থেকে তা কিছুটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় দলের কর্মী-সমর্থকদের উপরও নেতৃত্বের নিয়ন্ত্রণে শিথিলতা দেখে গিয়েছে। প্রাথী ঘোষণা না হলেও নেতাদের অনুমতি ছাড়াই দেওয়ালে নাম লিখতে শুরু করেন অনেকে। তা নিয়েও দলের অন্দরে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা গিয়েছে। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে এ দিন দেওয়াল লিখনে সেখান থেকে তৃণমূল প্রার্থী রঞ্জন শীলশর্মার নাম লেখা হয়। রঞ্জনবাবুর কাছে অভিযোগ যাওয়ার পর তিনি নাম লেখা বন্ধ করতে বলেন। তিনি বলেন, “আমি আত্মীয়ের বাড়িতে গত দুই দিন কোচবিহারে ছিলাম। এ দিনই এসেছি। প্রার্থী ঘোষণা না হলেও অত্যুত্সাহী কয়েকজন দেওয়ালে নাম লেখা শুরু করেছিলেন। দলের নীতি মেনে আমরা তা করি না। তাই তাদের নিষেধ করা হয়েছে। সে সমস্ত জায়গায় নাম লেখা হয়েছে সেগুলিও মুছে দিতে বলা হয়েছে।”
প্রার্থী নিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে দলের মধ্যে কোন্দল চলছেই। ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি গোপাল সাহার অনুগামীরা মঞ্চ বেঁধে তাঁকে প্রার্থী করার দাবিতে অবস্থান করছেন। অন্য দিকে ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার অন্যতম দাবিদার সঞ্জয় পাঠক। ৩ নম্বর ছাড়াও ২৫, ৩৩, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের প্রার্থী নিয়ে গোষ্ঠী কোন্দল রয়েছে।
জেলা বামফ্রন্টের তরফে বুধবারই প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। তবে ১১ এবং ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী তারা ওই দিন জানানি। বৃহস্পতিবার ওই দুই ওয়ার্ডে তাদের প্রার্থী রাধা ছেত্রী এবং লক্ষ্মী মাহাতো। বিজেপি অবশ্য এ দিনও প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করতে পারেনি।