বিমানবন্দরের রানওয়ে। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশ থেকে এ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বিমান যোগাযোগের দাবি বহু দিনের। আগেও বাংলাদেশ ও ভারতের পর্যটন সংগঠনের যৌথ বৈঠকে সে দাবি সামনে এসেছে। ঢাকা ও কক্সবাজারে ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশের পর্যটন ব্যবসায়ীদের সংগঠনের বৈঠকে তা আবার সামনে এল। ঢাকা, চট্টগ্রাম তো বটেই, সৈয়দপুর থেকে বাগডোগরায় বিমান যোগাযোগের ভাবনা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সামনে এসেছে ভিসার সমস্যার বিষয়ও। সার্কভুক্ত দেশগুলিতে একটি ভিসার পদ্ধতি চালু করার দাবি তোলা হয়েছে।
গত ২৬ অগস্ট থেকে ৩১ অগস্ট বাংলাদেশে ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশ নিয়ে সীমান্ত পর্যটনের বিকাশ বিষয়ে ঢাকায় বসে ত্রিদেশীয় আসর। ‘প্যাসেফিক এশিয়া ট্রাভেল অ্যাসোসিয়েশন’ (পাটা)-র বাংলাদেশ ‘চ্যাপ্টার’ এর উদ্যোক্তা ছিল। যৌথ পর্যটন সার্কিট তৈরির পরিকল্পনা বৈঠকে সামনে আসে। মূলত ভিসা, বিমান পরিষেবা, পর্যটন নিরাপত্তার মতো বিভিন্ন দিক উঠে আসে। বাংলাদেশের অসামরিক বিমান পরিবহণ এবং পর্যটন মন্ত্রী মাহবুব আলি বাংলাদেশের পর্যটন বিকাশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি জানান, যৌথ ভাবে সমন্বয় বাড়িয়েই পর্যটনের বিকাশে কাজ করতে হবে এবং সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থাও গুরুত্বপূর্ণ।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, বাগডোগরা বিমানবন্দর আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে সম্প্রসারিত হয়ে আধুনিক হয়ে উঠতে চলেছে। দেশের আরও বহু প্রান্তের সঙ্গে নতুন করে জুড়বে বাগডোগরা। ভুটানের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বাগডোগরার। পড়শি নেপাল বা বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ জরুরি। বেশ কয়েক বছর আগে বাগডোগরা থেকে কাঠমান্ডু বিমান চালু হয়েছিল। পরে কোনও কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে বরাবর বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগের দাবি রয়েছে। কোচবিহার চ্যাংরাবান্ধা, শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি দিয়ে সড়ক পরিবহণে দুই দেশের যাতায়াত এবং বাণিজ্য চলছে। মিতালী এক্সপ্রেসে রেল পরিবহণও জুড়েছে। বাদ রয়েছে শুধু বিমান যোগাযোগ।
‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক’-এর সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সীমান্ত পর্যটনের বিকাশ বৈঠকের মূল লক্ষ্য। সেখানে ভিসার সমস্যা থেকে বিমান যোগাযোগ সবই সামনে এসেছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশ থেকে এ দেশের আসার প্রক্রিয়া সরল করা প্রয়োজন।’’
উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, কালিম্পং বা ডুয়ার্স বরাবর বাংলাদেশে জনপ্রিয়। সিকিমও নিষেধাজ্ঞা তুলে বাংলাদেশের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। পাশেই রয়েছে নেপাল। পানিট্যাঙ্কি, কাঁকরভিটা দিয়েও নেপালে যান বাংলাদেশিরা। ফুলবাড়ি, চ্যাংরাবান্ধার মতো সীমান্ত এলাকা দিয়ে বিরাট সংখ্যাক বাংলাদেশি ভারতে আসেন। চিকিৎসা এবং পর্যটনের কারণেই মূলত বাংলাদেশিরা এপারে আসেন। এ ক্ষেত্রে বিমান পরিষেবা রয়েছে শুধুমাত্র কলকাতা দিয়ে। আপাতত সৈয়দপুর থেকে বাগডোগরা বিমান চলাচল করানোর চেষ্টা শুরু হয়েছে। সৈয়দপুর থেকে ঢাকা নিয়মিত বিমান পরিষেবা চলে। এর ফলে ফুলবাড়ি দিয়ে সৈয়দপুর পৌঁছে কয়েক ঘণ্টায় ঢাকা যাওয়া সম্ভব হবে।
ওই বৈঠকে ব্যবসায়িক আদান-প্রদান নিয়েও আলোচনা হয়েছে।