প্রতীকী ছবি।
রেলকর্মীরা পদোন্নতির পরীক্ষা দিচ্ছেন। তাই চার দিন বাতিল করা হয়েছে নয় জোড়া প্যাসেঞ্জার ও ডিএমইউ ট্রেন। না জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। বিভাগীয় পরীক্ষার জন্য উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের এমন সিদ্ধান্ত নজিরবিহীন বলে জানাচ্ছে কর্মীদেরই একাংশ।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের সদর দফতর অসমের মালিগাঁওতে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরীক্ষা চলছে। পদোন্নতির আশায় সেই পরীক্ষায় বসেছেন অন্তত তিনশো ইঞ্জিন চালক ও সহকারী চালক। অভিযোগ, সেই পরীক্ষার জন্যই যাত্রী পরিষেবায় কোপ বসিয়েছে রেল। বাতিল করা হয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি থেকে কোচবিহার, ধুবুরি-সহ অসম-ডুয়ার্স-শিলিগুড়ি যোগাযোগের ট্রেনগুলি।
উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের সিনিয়র কর্মাশিয়াল ম্যানেজার বীরেন্দ্র মিশ্র বলেন, ‘‘এ বছর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। সে কারণে বাধ্য হয়েই কয়েকটি ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ নেহাতই সাময়িক। আগামী বুধবার থেকে ফের স্বাভাবিক ভাবেই সব ট্রেন চলাচল করবে।’’
২৬ ও ২৭ জানুয়ারি, পরপর দু’দিন রেলের অভ্যন্তরীণ সার্কুলারে পরীক্ষার জন্য ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত উল্লেখও করা হয়েছে। বাতিল হওয়া ট্রেনগুলির মধ্যে রয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি-নিউ রঙ্গিয়া প্যাসেঞ্জার, শিলিগুড়ি-দিনহাটা প্যাসেঞ্জার, শিলিগুড়ি-ধুবুরি ইন্টারসিটি, আলিপুরদুয়ার জংশন-কামাখ্যা ইন্টারসিটি, আলিপুরদুয়ার-বামনহাট প্যাসেঞ্জার, শিলিগুড়ি-নিউ কোচবিহার ডিএমইউ, নিউ কোচবিহার-শিলিগুড়ি প্যাসেঞ্জার, নিউ জলপাইগুড়ি নিউ বঙ্গাইগাঁও ডিএমইউ।
শিলিগুড়ি-বামনহাট ডিএমইউ-এর যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে আলিপুরদুয়ার থেকে চালানো হচ্ছে। গত শনিবার থেকে ট্রেনগুলো বাতিল হয়ে রয়েছে। আজ, মঙ্গলবার পর্যন্ত ট্রেনগুলি বাতিল থাকবে।
যাত্রীদের ক্ষোভ, ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্তও আগেভাগে জানানো হয়নি। রেল সূত্রের খবর, বিভাগীয় পরীক্ষার মতো কারণ দেখালে যাত্রী অসন্তোষ তৈরি হতে পারে আশঙ্কা করেই বিজ্ঞাপন দিয়ে বাতিলের কথা জানায়নি রেল। তাতে যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্সে প্রতিদিন যাতায়াত করা শিক্ষক নির্ঝর দাশগুপ্তের কথায়, ‘‘যাত্রী পরিষেবা হল রেলের অগ্রাধিকারের একেবারে নীচে। সেটা ফের স্পষ্ট হল।’’ অনেকে জানান, অনেকেই এই ট্রেনগুলোতে নিত্য যাতায়াত করেন। তাঁদের কথা না ভেবে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া কখনওই উচিত হয়নি। রেলকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরীক্ষা ধাপে ধাপে নিলেই সমস্যা হতো না। কাটিহার বিভাগের ডিআরএম চন্দ্র প্রকাশ গুপ্তের দাবি, ‘‘সব কিছু বিবেচনা করেই এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’