ফাইল চিত্র
ওঁরা একসময় বিপদে পড়েছিলেন। তার পরে মূলস্রোতে ফিরে ওঁরাই শেখাবেন সাবধানতার প্রথম পাঠ। বোঝাবেন, কোনটা সুযোগ আর কোনটা প্ররোচনা।
এক দিন ওঁরা পাচারকারীদের খপ্পরে পড়েছিলেন। এ বারে এলাকার কোনও মেয়ে পাচার হয়ে গিয়েও ফিরে এলে, তাঁকেও কাউন্সেলিং করবেন আগে উদ্ধার হওয়া মেয়ের দল। কেন?
প্রবাদ বলছে, একমাত্র ভুক্তভোগীই জানেন যন্ত্রণা কেমন এবং কোথায়! মেয়েদের নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মত, পাচারের মতো ঘটনার পরে মেয়েদের মুলস্রোতে ফেরায় সবচেয়ে বেশি সহযোগী হতে পারেন সমঅভিজ্ঞতা সম্পন্ন মেয়েরা। বৃহস্পতিবার থেকে জলপাইগুড়ির অনুভব হোমে ১৬ জন মেয়েকে তেমনই প্রশিক্ষণ দেওয়া হল।
এই ১৬ জন মেয়ে সকলেই কোনও না কোনও সময়ে পাচার হয়ে গিয়েছিলেন। উদ্ধার হয়ে এসে কিছু দিন তাঁরা ছিলেন অনুভব হোমে। সকলেই এখন বাড়িতে রয়েছেন। তাঁদের ডেকে পাঠানো হয়েছিল অনুভবে। তিন দিন ধরে তাঁদের শেখানো হল পাচার হয়ে ফিরে আসা মেয়েদের জন্য কী কী সরকারি প্রকল্প রয়েছে, তাঁরা কোন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেতে পারে। সেই সঙ্গে শেখানো হয়েছে কাউন্সেলিংও। সাধারণত পাচার হয়ে পেরত আসা মেয়েদের মানসিক পরিস্থিতি ভাল থাকে না, মনোবল তলানিতে চলে যায়। সেই সময় তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন কোনও একসময়ে পাচার হয়ে ফিরে আসা মেয়েরাই।
জলপাইগুড়ির অনুভব হোমের কর্ণধার দীপশ্রী রায় বলেন, “এটি অবশ্যই অভিনব একটি উপায়। যে মেয়ে আগে পাচার হয়ে উদ্ধার হয়ে এসেছে, সে অবশ্যই আর এক মেয়েকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে বেশি কার্যকর ভূমিকা নেবে। এতে শুধু সদ্য যে মেয়েটি পাচার হয়ে এসেছে সেই-ই নয়, যে এখন মুলস্রোতে আছে সেও উপকৃত হবে।”
পাচার হয়ে যাওয়া মেয়ের এক এক রকম গল্প রয়েছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, নানা ভাবে তাঁদের ফাঁদে ফেলা হয়েছে। সেই গল্পও এলাকার অন্য মেয়েদের জানানোর কথা বলা হয়েছে প্রশিক্ষণে। এলাকার কোনও মেয়ের সঙ্গে অসৎ উদ্দেশ্যে কোনও ব্যক্তি মেলামেশা করলে তা সহজেই পাচার হয়ে ফিরে আসা মেয়েদের চোখে পড়তে পারে বলে মনে করছেন সমাজকর্মীরাও।