—ফাইল চিত্র।
ভুটানে ঘুরতে গেলেই এখন মাথাপিছু প্রতিদিন ১২০০ টাকা করে ‘সুস্থায়ী উন্নয়ন ফি’ দিতে হয় ভারতীয় পর্যটকদের। গত বছর তিনেক ধরে চলে আসা এই নিয়মের কারণে আর সহজে ভুটানমুখী হন না ভারতীয় পর্যটকেরা। বাঙালি পর্যটকেরা ডুয়ার্স বেড়াতে গেলেই দু’-এক দিনের জন্য ভুটান ঘুরে আসতে চান। শুধু বাজেট ছাড়িয়ে যাওয়ার ভয়ে ‘এশিয়ার সুইৎজ়ারল্যান্ড’ দেখার স্বপ্ন তাঁদের অধরা থাকে। এ বার সেই অবস্থা কিছুটা বদলাতে চলেছে।
ডুয়ার্স থেকে ভুটান সীমান্তের জয়গাঁর ফুন্টসোলিংয়ের কাছেই চুখা জেলা। চুখা থেকে প্রায় পুরোপুরি দেখা যায় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প। সেই কারণেই ডুয়ার্সে গিয়ে এক বার ভুটানের চুখা ঢুঁ মেরে আসার প্রবণতা ছিল বাঙালি পর্যটকদের মধ্যে। কিন্তু ভুটানে উন্নয়ন কর চালু হওয়ার পর থেকে তা আর তেমন দেখা যায় না। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ পর্যটকদের জন্য করমুক্ত ঘোষণা করা হল চুখা জেলাকে। এ নিয়েই ২৭ সেপ্টেম্বর, বুধবার, বিশ্ব পর্যটন দিবসে মউ স্বাক্ষরিত হল ভুটান সরকার এবং ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজার্ভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজ়ম’-এর মধ্যে।
মউ স্বাক্ষরের পর রাজ্যের ইকো ট্যুরিজ়ম দফতরের চেয়ারম্যান রাজ বসু ঘোষণা করেন, ‘‘বহু পর্যটক রয়েছেন, যাঁরা ডুয়ার্সে ঘুরতে এলে ভুটানে এক থেকে দু’দিন কাটাতে চান। কিন্তু ভুটানের করের কারণে তা হয়ে উঠে না। পর্যটকদের কথা মাথা রেখেই ভুটান সরকারের সঙ্গে কথা বলে ইন্দো-ভুটান সীমান্ত জয়গাঁর ফুন্সিলংয়ের কাছাকাছি চুখা জেলা এক দিনের জন্য কর মুক্ত করা হয়েছে। চুখা থেকে বক্সা টাইগার রিজার্ভকে পুরোপুরি দেখা যায়।’’
গত ২০২০ সালে ভুটান আইনসভার নিম্নকক্ষে পর্যটন সংক্রান্ত একটি আইন পাশ হয়েছিল। তাতে বলা হয়, ভারত, বাংলাদেশ ও মলদ্বীপ থেকে যাওয়া পর্যটকদের মাথাপিছু প্রতি দিন ১২০০ টাকা করে ‘সুস্থায়ী উন্নয়ন’ ফি দিতে হবে। সূত্রের খবর, ভুটানে ভারতীয় পর্যটকদের সংখ্যা লাগাতার বাড়তে থাকায় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ভুটান সরকার। ২০১৮ সালে তুলনায় ২০১৯ সালে ভারত, বাংলাদেশ ও মলদ্বীপ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি পর্যটক ভুটানে গিয়েছিলেন। মাত্রাতিরিক্ত পর্যটকের হাত থেকে প্রকৃতিকে বাঁচাতেই ভুটান সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে দাবি সংশ্লিষ্ট মহলের।