বর্ষার পাহাড়। পর্যটনের প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
দেশের কয়েকটি রাজ্যের মতো ধস-জল এড়িয়ে করোনা সংক্রমণের আগে পাহাড়ে শুরু হয়েছিল ‘মনসুন টুরিজ়ম’। মাঝে বেশ কিছুকাল অতিবাহিত হয়েছে সমস্যার মধ্যে। এ বার নতুন করে বাড়ছে বর্ষায় পাহাড়ের পর্যটনের আকর্ষণ। বাংলার বিভিন্ন জেলা, ভিন্ রাজ্য এবং প্রতিবেশী দেশ থেকে পাহাড়ে বর্ষা উপভোগ করতে আসছেন পর্যটকেরা। সবচেয়ে বেশি আসছেন দক্ষিণ ভারতের পর্যটকেরা। উৎসাহ বাড়াতে ভাল ছাড়ও মিলছে হোটেল, রিসর্টে। পাশাপাশি, কর্পোরেট মিটিং এবং নানা ইভেন্টও চলছে বর্ষার পাহাড়ে। ‘মনসুন টুরিজ়ম’ নিয়ে অনেকটাই আশান্বিত পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে হিমাচল প্রদেশের ধস, বন্যার প্রভাব কিছুটা হলেও পড়েছে বর্ষার পর্যটনে।
সরকারি স্তরে পাহাড়ের পর্যটন মরসুমের কথা জানাতে বিজ্ঞাপন কিছু দিন আগেই তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন মাধ্যমে তার প্রচারও চলছে। সেখানে বৃষ্টিভেজা দার্জিলিঙের চা বাগান এবং ধোঁয়া ওঠা দার্জিলিং চায়ের কাপশোভা পাচ্ছে।
রাজ্য পর্যটন দফতরের এক সচিবের কথায়, ‘‘মনসুন টুরিজ়ম গোটা দেশেই বেড়েছে। পাহাড়েও ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। বর্ষায় তিন থেকে চার মাসের প্রায়-বন্ধ পর্যটন ব্যবসা নতুন দিশা দেখছে এর ফলে।’’ ‘হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজ়ম ডেভেলপমেন্ট’ সংস্থার সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘মনসুন পর্যটন আবার পাহাড়ে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।’’
কালিম্পং জেলায় হোটেল ও রিসর্ট মালিকেরা ৫০ শতাংশ অবধি ছাড় দিচ্ছেন। কালিম্পঙের হোটেল-রেস্তরাঁ মালিকদের সংগঠনের সভাপতি সিদ্ধান্ত সুদ বলেন, ‘‘বাংলার বিভিন্ন জেলা তো বটেই, অন্যান্য প্রদেশ থেকেও বর্ষায় পর্যটকেরা পাহাড়ে আসছেন। অন্য মরসুমে ঘরভাডা, পরিবহণের খরচ বেশি থাকে। বর্ষায় তা কমে যায়। কোথাও কোথাও ৫০ শতাংশ অবধি ছাড় রয়েছে। তাতেও পর্যটনের আকর্ষণ বাড়ছে।’’
পর্যটন দফতর এবং পুলিশ প্রশাসনের তরফে অবশ্য বর্ষায় পর্যটকদের সাবধানতা অবলম্বনের কথা বলা হচ্ছে। বিশেষ করে পাহাড়ি রাস্তা বর্ষায় গাছের পাতা, জলে পিছল হয়ে যায়। পাহাড়ি পথে জল-কাদার সমস্যার পাশাপাশি, পোকামাকড়ের সমস্যাও থাকে।
তবে এ সবের মধ্যেই বর্ষার পাহাড় টানছে পর্যটকদের। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির মধ্যেও বেরিয়ে পড়ছেন পর্যটকেরা, ঘুরে বেড়াচ্ছেন পাহাড়ে। হিসাব বলছে, করোনার আগের দু’বছর বর্ষায় পাহাড়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ হোটেলের ঘরের বুকিং হয়েছিল। করোনা-পর্বে পর্যটন ধসে পড়েছিল। এ বার এখনও অবধি সেই সংখ্যা ২৫ শতাংশ পার করছে। এই পরিসংখ্যান আশা জাগাচ্ছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের।