এনজেপি স্টেশনে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা। — নিজস্ব চিত্র।
বাড়ি ফেরা নয়, এ যেন হার্ডল রেস! একের পর এক বাধা পেরিয়ে তবে পৌঁছতে হবে গন্তব্যে। এমনই পরিস্থিতির পড়েছেন সিকিম, দার্জিলিং থেকে নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) স্টেশন হয়ে ফিরতে চাওয়া যাত্রীরা। ধস, রাস্তায় আটকে পড়া ইত্যাদি ‘হার্ডল’ পেরিয়ে এনজেপি স্টেশনে নতুন বাধার মুখে যাত্রীরা। ‘অগ্নিপথ’ আন্দোলনের জেরে বাতিল বহু ট্রেন। তার ফলে শনিবার রাত থেকে স্টেশনেই আটকে অনেক যাত্রী। অনেকে আবার অন্য পথ বেছে নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন গন্তব্যে।
এক টানা বৃষ্টিতে জেরবার পাহাড়। গত সপ্তাহ থেকে সিকিম তো বটেই, দার্জিলিং, কালিম্পঙেও নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে। তার জেরে ধস নামে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। অন্য দিকে, উত্তর থেকে পূর্ব সিকিমের বিভিন্ন রাস্তাও বন্ধ ছিল সাময়িক ভাবে। শনিবার থেকে উত্তর এবং পূর্ব সিকিমের প্রধান সড়কগুলির পরিস্থিতি খানিকটা স্বাভাবিক। ফলে সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকেরা এ বার নামতে শুরু করেছেন। কিন্তু এই সময়ে ভিন্ন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ‘অগ্নিপথ’ আন্দোলনের জেরে। তার ফলে একের পর এক ট্রেন বাতিল হয়ে চলেছে। এনজেপি স্টেশন থেকে দূরপাল্লার কোনও ট্রেন ছাড়ে না। কিন্তু উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হিসাবেই বিবেচিত হয় ওই স্টেশন। গত দু’দিন ট্রেন বাতিল থাকলেও ভিড় ছিল না এনজেপিতে। কিন্তু পাহাড়ের রাস্তা সাফ হতেই ভিড় বাড়তে শুরু করেছে এনজেপিতে। শনিবার সন্ধ্যার পর থেকে অনেকেই আটকে পড়েছেন স্টেশনে।
এনজেপি স্টেশনে আটকে পড়াদের মধ্যে ছিলেন কানপুরের বাসিন্দা জয়সরেন সিংহ। তিনি বললেন, ‘‘গ্যাংটক-দার্জিলিং বেড়াতে এসেছিলাম পরিবার নিয়ে। রাজধানীতে টিকিট কাটা থাকলেও গত কাল থেকে কোনও নতুন তথ্য পাচ্ছি না স্টেশনের তরফে। ফলে আমাদের স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে। গত কাল জানতে পেরেছিলাম আমাদের টিকিট বাতিল হয়েছে। পরিবর্তে আজ টিকিট পেলাম। কিন্তু ট্রেনের কোনও দেখা নেই। এর মধ্যে বাড়িতেও একটি দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সেখানে পৌঁছনো খুবই দরকার।’’
স্টেশনে অপেক্ষারত সেনাকর্মী সাইমন লোবো বলে দিলেন, ‘‘দার্জিলিং থেকে আসছি। আমার বাড়ি গোয়ায়। সেখানে ফিরব। কিন্তু টিকিট থাকলেও ট্রেন নেই। স্টেশনে শুধু এ ঘর থেকে ও ঘর ঘুরছি।’’