উড়ালপুলে পদযাত্রায় মন্ত্রী, বিতর্ক

উড়ালপুল দিয়ে হাঁটা নিষেধ। অথচ বিধি ভেঙে টেবল টেনিসের জন্য পদযাত্রা হল সেই উড়ালপুলের উপর দিয়েই। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে উড়ালপুলের উপর দিয়ে ওই পদযাত্রায় হাঁটলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১৪
Share:

উড়ালপুলে চলছে মিছিল। — নিজস্ব চিত্র

উড়ালপুল দিয়ে হাঁটা নিষেধ। অথচ বিধি ভেঙে টেবল টেনিসের জন্য পদযাত্রা হল সেই উড়ালপুলের উপর দিয়েই। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে উড়ালপুলের উপর দিয়ে ওই পদযাত্রায় হাঁটলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবও। সামিল হলেন মহকুমাশাসক পানিক্কর হরিশঙ্কর, শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সেমিক লেপচা, ট্রাফিক পুলিশের ডিসি সুনীল যাদব, নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মান্তু ঘোষ-সহ অনেকেই।

Advertisement

সোমবার ট্রাফিক বিধি ভেঙে বিনা হেলমেটে হিলকার্ট রোডে স্ত্রীকে নিয়ে রাস্তার ভুল দিক দিয়ে স্কুটার চালানোর অভিয়োগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা তথা কাউন্সিলর নান্টু পালের বিরুদ্ধে। এ দিন পর্যটন মন্ত্রী উড়ালপুলের উপর দিয়ে পদযাত্রায় অংশ নেওয়ায় বিধি ভাঙা হয়েছে কি না তা নিয়ে বিতর্ক দানা বাঁধছে।

এ দিন পদযাত্রার জেরে শিলিগুড়ি থানার সামনে থেকে উড়ালপুলের যে অংশ উঠেছে তাতে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়লে যানজট তৈরি হয়। টিকিয়াপাড়ার অংশে উড়ালপুলে গাড়ি ওঠা বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাসমিচক হয়ে যে সমস্ত গাড়ি উড়ালপুলে উঠত সেগুলিও দাঁড়িয়ে পড়ে। সাধারণ নিয়মে উড়ালপুলের উপরে হেঁটে যাতায়াত যেখানে নিষিদ্ধ সেখানে নিয়ম ভেঙে কেন উড়ালপুলের উপর দিয়ে টেবল টেনিসের পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দাদের অনেকেই। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘পদযাত্রার পথ উদ্যোক্তারা প্রশাসনের সঙ্গে বসে ঠিক করে। তা ছাড়া মিনিট দশেক পদযাত্রা উড়ালপুলের ওপর দিয়ে গিয়েছে। সে সময় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। খেলার স্বার্থে এর জন্য বড় কোনও সমস্যা হয়নি।’’

Advertisement

উদ্যোক্তা এবং প্রশাসনের একাংশ মনে করছেন উড়ালপুলে হেঁটে যাতায়াত যেখানে নিষিদ্ধ সেখানে তা না করলেই হত। কেন না তা নিয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন উঠতে পারে। মহকুমাশাসক অবশ্য তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার চেলিং সেমিক লেপচা জানান, টেবল টেনিসের প্রতিযোগিতার জন্যই এই বিশেষ পদযাত্রা হয়েছে। অন্য কোনও বিষয় নেই। ডিসি ট্রাফিক সুনীল যাদব বলেন, ‘‘মিছিলের জন্য আগাম অনুমতি নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। পুলিশ আইন মেনে এ ধরনের মিছিল সুবিধা মতো রাস্তা দিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারে। কোনও সমস্যা নেই।’’ আয়োজক কমিটির সম্পাদক সুব্রত রায় জানান, পুলিশের অনুমতি নিয়েই সমস্ত কিছু করা হয়েছে।

কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে শিলিগুড়ি মহকুমা ক্রীড়া পরিষদের সামনে থেকে বেলা একটা নাগাদ এ দিন পদযাত্রা শুরু হয়। সেখান থেকে হাসপাতাল মোড়, হাসমিচক হয়ে উড়ালপুলের উপর দিয়ে মিছিল টিকিয়াপাড়ায় পৌঁছয়। সেখান থেকে এনটিএস মোড় হয়ে শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মিছিল শেষ হয়।

আগামী বৃহস্পতিবার থেকে শিলিগুড়ি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে জাতীয় ক্যাডেট এবং জুনিয়র টেবল টেনিস প্রতিযোগিতা নিয়ে শুরু থেকেই নানা অভিযোগ উঠছে। মেয়র তথা শিলিগুড়ির বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্যকে এমন পদযাত্রায় না ডাকা, আমন্ত্রণ পত্রে তাঁর নাম না থাকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে নাম রয়েছে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর।

পুরসভার ক্রীড়া বিভাগের মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘প্রতিযোগিতার জন্য নামমাত্র অর্থে পুরসভার অধীনে থাকা ওই ইন্ডোর স্টেডিয়াম দেওয়া হয়েছে। নানা সময় পুরসভায় এসে কর্মকর্তারা আলোচনা করে গিয়েছেন। অথচ মেয়র তথা শিলিগুড়ির বিধায়ককে কোথাও ডাকা হচ্ছে না।’’ আয়োজক কমিটির মুখ্য পৃষ্ঠপোষক পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘ওটা কোনও বিষয় নয়।’’ নর্থ বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম কর্মকর্তা সুব্রত রায় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক গোলমালে প্রতিযোগিতা যাতে নষ্ট না হয় তা দেখতে হবে। মেয়রকে আগে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ডাকা হয়েছিল। তিনি আসতে পারেননি। তবে এ ক্ষেত্রে আমরা তাঁকে আমন্ত্রণ নিশ্চয়ই জানাব।’’

এ দিন টেবল টেনিসের জন্য পদযাত্রার শুরুতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না করতে পারায় ‘থিম সং’ বাজাতে পারেননি উদ্যোক্তারা। পরে পদযাত্রার শেষের দিকে কিছুক্ষণের জন্য বাজানো গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement