ডিসেম্বর মাস শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ এখনও গরম কাটেনি। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপানায় বিপাকে পড়েছেন হলদিবাড়ির কৃষকেরা। গাছে পোকামাকড়ের সংখ্যা বাড়ছে। আক্রান্ত হচ্ছে টোম্যাটো গাছ। পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। ফল ধরলেও গাছ না বাড়ার ফলে ফল বাড়ছে না।
হলদিবাড়ি ব্লকের কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্র বলেন, “শীত না পড়ায় এ বছর এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের গাছে পোকা মারার ওষুধ স্প্রে করতে বলা হচ্ছে। তবে আবহাওয়ার পরিবর্তন না হলে পোকা সহজে মরবে না। এখন শীত পড়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে।”
ব্লক কৃষি দফতর সুত্রে জানা গিয়েছে যে, এ বছর হলদিবাড়িতে ১ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে টোম্যাটোর চাষ হচ্ছে। তার মধ্যে ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ইতিমধ্যে টোম্যাটো লাগানোও হয়ে গিয়েছে। জলদি জাতের টোম্যাটো জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বাজারে আসার কথা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে পোকার সমস্যায় অতিষ্ঠ চাষিরা। কিছু পোকা খালি চোখে দেখা যায় না। তারা গাছকে বেশি আক্রমণ করছে। এ ছাড়া, অন্য পোকা তো আছেই। যে পোকাগুলিকে খালি চোখে দেখায় যায় না, তাদের আক্রমণের প্রধান নিশানা হচ্ছে গাছের পাতা। এদের জন্যই পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে।
হলদিবাড়ি থানার ১৭ জঙ্গলবসের বাসিন্দা আতিয়ার রহমান এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে টোম্যোটো চাষ করেছেন। জ্ঞানদাস গ্রামের কৃষক কাইমুল হক ৩ বিঘা জমিতে টোম্যাটো চাষ করেছেন। দু’জনেই বলেন, “গাছ সবে এক ফুট হয়েছে। এ রকম অবস্থায় পাতা কুঁকড়ে যাচ্ছে। গাছও বাড়ছে না। খুব সমস্যায় পড়েছি।”
গত বছরের তুলনায় এ বার ঠান্ডা তো তেমন পড়েইনি, তার ওপর মাঝে মধ্যেই মেঘলা আবহাওয়া। দিনের বেলা হাল্কা কুয়াশাও থাকছে। কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন যে, এই সময় টোম্যাটো চাষের পক্ষে যেটা সব থেকে জরুরি, তা হল শীতের সঙ্গে সঙ্গে দিনের বেলা ঝকঝকে রোদ। রাতে কুয়াশা থাকলে ক্ষতি নেই। কিন্তু এ বার দিনের বেলাও রোদ নেই। আবহাওয়ায় গরম ভাব থেকেই যাচ্ছে। এই আবহাওয়ায় পোকামাকড়েরা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। হলদিবাড়িতে এ বছর এটাই ঘটছে।