ছবি: প্রতীকী
কোচবিহারে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। তার পরেই দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার হিড়িক পড়েছে জেলায়। অনেকেই পদ ছাড়ার পর হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছেন, দলীয় প্রচারে তাঁরা অংশ নেবেন না। কোথাও আবার দল থেকেই ইস্তফা দিয়েছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁদের তরফে জানানো হয়েছে, ‘বিক্ষুব্ধ’দের সঙ্গে কথা বলা হবে।
তৃণমূলের অভ্যন্তরে বার বার গোষ্ঠীকোন্দলের অভিযোগ উঠেছে কোচবিহারে। টিকিট দেওয়াকে কেন্দ্র করে দলে যাতে ভাঙন না ধরে, সে কারণে শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতালিকা ঘোষণা করেছে তৃণমূল। কিন্তু তার পরেও ভাঙন ঠেকানো গেল না বলেই মনে করছেন দলের একাংশ।
বুধবার কোচবিহার-১ ব্লক তৃণমূলের সহ-সভাপতি মজিউল হক পদ থেকে ইস্তফার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানিয়েছেন, টিকিট দেওয়া হয়নি বলেই এই সিদ্ধান্ত। জানিয়েছেন, তৃণমূলে থাকলেও দলের হয়ে কোনও কাজ করবেন না তিনি। মজিউলের দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকে তাঁর পরিবারের সদস্যেরা ওই এলাকার পঞ্চায়েতে রয়েছে। বহু বছর তিনি শুকটাবাড়ি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। অভিযোগ, তার পরেও তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। মজিউলের আরও অভিযোগ, ওই এলাকার আরও ১১ জনের নাম জমা দেওয়া হয়েছিল জেলা সভাপতি কাছে। তাঁদেরও টিকিট দেওয়া হয়নি। মজিউলের অভিযোগ, ‘‘টাকা দিতে পারিনি বলেই টিকিট দেওয়া হয়নি।’’
একই ছবি তুফানগঞ্জের বালাভূত গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর বালাভূত নয়ার চর এলাকায়। ‘পছন্দের’ প্রার্থীকে টিকিট না দেওয়ায় দলীয় পদ থেকে ইস্তফা দেন বুথ সভাপতি অখিল দাস-সহ ১৫ জন। অখিলের দাবি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার কর্মসূচি’তে প্রার্থী নির্বাচনে বুথের কর্মীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। ৯/২৪১ নম্বর বুথের প্রার্থীপদে যাঁর নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত বলেও অখিলের অভিযোগ।
অন্য দিকে, পঞ্চায়েত সমিতির টিকিট না পেয়ে দল থেকে ইস্তফা দেন দিনহাটা-১ পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি মফিজুল হক। তাঁর অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে দিনহাটায় বিক্রি হয়েছে টিকিট। মফিজুলের কথায়, ‘‘উদয়ন গুহ (উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী) বেছে বেছে বামপন্থীদের টিকিট দিয়েছেন। পুরনো তৃণমূল কর্মীরা টিকিট পাচ্ছে না। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে টিকিট দেওয়া হয়নি।’’
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘দু’একটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে দু’-এক জন এই ধরনের অভিযোগ করছেন। অনেক সময় দলের মধ্যে ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকে। প্রয়োজনে আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলব। আমাদের বিশ্বাস, মনোনীত প্রার্থীদের জন্য সকলেই প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।’’