বিক্ষোভে তৃণমূল কর্মীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পথবাতি লাগানোয় দুর্নীতির অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান সৌমেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে চলছে মামলা। সম্প্রতি থানায় ডেকে ১০ ঘণ্টার বেশি জেরা করা হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার ভাই শুভেন্দুর ভাইকে। এ বার সেই বাতিস্তম্ভ লাগানো নিয়ে তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন দলেরই একাংশ। বুধবার আলোর দাবিতে বিক্ষোভ করলেন মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে দলেরই একাংশের এমন বিক্ষোভে অস্বস্তিতে শাসক দল। অন্য দিকে, এ নিয়ে কটাক্ষের সুযোগ হাতছাড়া করেনি বিজেপি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাড়িয়াল গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পাশে দীর্ঘ তিন মাস ধরে খারাপ হয়ে পড়ে রয়েছে বাতিস্তম্ভ। সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকারে ডুবে যায় এলাকা। অথচ, আলোর কাজে অনেক টাকা খরচ করা হয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষের বাস ওই এলাকায়। গত তিন মাস ধরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য থেকে গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকেও বারবার বিষয়টি নিয়ে বলার পরেও কোনও সুরাহা হয়নি। তাই তাঁরা বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন বলে জানান মেরাজুল ইসলামদের মতো তৃণমূল কর্মীরা। তৃণমূলের ওই কর্মী সমর্থকদের অভিযোগ, এই বাতিস্তম্ভ লাগানো নিয়ে প্রচুর টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সব সময় পুরনো আলো লাগানো হয়। ফলে কিছু দিনের মধ্যেই খারাপ হয়ে যায়। এক তৃণমূল কর্মীর দাবি, ‘‘মাত্র এক বছর আগে ঘটা করে আড়াই লক্ষ টাকা খরচ করে উঁচু বাতিস্তম্ভ লাগানো হয়। কিন্তু এক বছর যেতে না যেতে কী ভাবে সেটা খারাপ হয়ে গেল!’’
মেরাজুল ইসলাম নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘তিন মাস ধরে আলো খারাপ। সন্ধ্যার পর যাতায়াত করতে প্রচণ্ড সমস্যা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সদস্যদের বললেও কোনও কর্ণপাত করছেন না। দুর্নীতি তো অবশ্যই হয়েছে।’’ একই কথা বলছেন তৃণমূল কর্মী মহম্মদ সালোও। যদিও বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে তৃণমূল নেতৃত্বই সাফাই দিয়ে বলছেন, ‘‘বৈদ্যুতিক জিনিস তো খারাপ হয়ে যেতে পারে। তবে সেটা ঠিক করে দেওয়া হবে।’’ তুলসিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শকুন্তলা সিংহের স্বামী রামপ্রসাদ সিংহ বলেন, ‘‘আমি দেখেছি, রাড়িয়ালে রাস্তার আলো খারাপ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখানে দুর্নীতির কোনও ব্যাপার নেই। নতুন আলো লাগিয়ে দেওয়া হবে।’’
অন্য দিকে, উত্তর মালদহ জেলা বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ অগ্রবাল বলেন, ‘‘ব্যাপক হারে দুর্নীতি হচ্ছে প্রত্যেকটা পঞ্চায়েতে। হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার বিভিন্ন জায়গাতেই এই বাতিস্তম্ভ লাগানো নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। আর্থিক অনিয়ম করবে বলে একই এলাকায় একাধিক বাতিস্তম্ভ লাগানোর টেন্ডার দেওয়া হচ্ছে।’’ তাঁর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূলের পুরোটাই দুর্নীতিগ্রস্থ। আর যারা কাটমানির ভাগ পায় না, তারাই বিক্ষোভ করে।’’