পাশে: মৃত নয়ন মণ্ডলকে দেখতে এলেন শশী। নিজস্ব চিত্র
এক তৃণমূল কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে মালদহের পুখুরিয়া থানার কুমারগঞ্জ এলাকা। শনিবার রাতে সামসিগামী রাজ্য সড়কের উপর কুমারগঞ্জের একটি পেট্রল পাম্পের সামনে মাথায় গুলি করে খুন করা হয় ওই তৃণমূল কর্মীকে। পাশাপাশি দুষ্কৃতীরা ব্যাপক বোমাবাজিও করে। কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীরা মিলে তাকে খুন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীরা অবশ্য জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক নেই।
নিহতের নাম নয়ন মণ্ডল (২০)। তল্লাশি চালিয়ে রাতেই পুলিশ ১০ জন কংগ্রেস ও সিপিএম কর্মীকে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে গ্রেফতার করেছে। এ দিন সকালে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মর্গে নিহতকে দেখতে যান সমাজকল্যাণ মন্ত্রী শশী পাঁজা। কংগ্রেস ও সিপিএম মিলে নয়নকে খুন করেছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনিও। সমাজকল্যাণ মন্ত্রী এ দিন বলেন, কংগ্রেস ও সিপিএম ওখানে সমঝোতা করে লড়াই করেও তৃণমূলকে আটকাতে না পেরে সন্ত্রাসের পথ নিয়েছে। রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া না হলে কেউ এসব করে না। তিনি বলেন, ‘‘আমরা নয়নের পরিজনদের পাশে রয়েছি।’’
পুলিশ ও নিহতের পরিজনদের সূত্রে জানা যায়, যেখানে নয়ন খুন হয়েছেন, সেখান থেকে তিন কিলোমিটার দূরে রঘুনাথপুরে তাঁর বাড়ি। এলাকাটি রতুয়া ২ ব্লকের শ্রীপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পড়ে। কংগ্রেস ও সিপিএম আসন সমঝোতা করে লড়ছে সেখানে। শুক্রবার রাতে রঘুনাথপুরে প্রচারে গিয়েছিলেন সিপিএম ও কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। ওই সময় নয়ন তাদের গ্রামে ঢুকতে বাধা দেন বলে অভিযোগ। তখনই তাকে বিরোধীরা দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় বলেও অভিযোগ। আবার প্রচারে বাধা দেওয়া সহ প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে তৃণমূলীরা বলে শনিবার দিনই পুলিশে অভিযোগ জানান জেলা পরিষদের কংগ্রেস প্রার্থী সাহিদা খাতুন। তারপর প্রচার সেরে রাত ১১টায় বাইকে চেপে বাড়ি ফেরার সময় নয়নকে ১০ থেকে ১২ জন ঘিরে ধরে মাথায় গুলি করে বলে অভিযোগ। ফাটানো হয় কয়েকটি বোমাও। ঘটনাস্থলের অদূরেই বাড়ি সিপিএম নেতা আব্দুল কুদ্দুসের। নয়নকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের তালিকায় কুদ্দুস ছাড়াও সাহিদার স্বামী মাসুদ আলমের নামও রয়েছে, জানিয়েছে পুলিশ।
কলকাতা পুলিশের কর্মরত নয়নের বাবা দু’বছর আগে মারা গিয়েছেন। আপাতত পরিবারে রোজগেরে ছিল নয়নই।
সাংসদ মৌসমের অবশ্য দাবি, ‘‘মনোনয়নে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেও সফল না হয়ে তৃণমূল এ বার অন্য পথ নিয়েছে। বিরোধীদের ফাঁসাতে নিজেরাই ওকে খুন করেছে। যে কোনও মৃত্যুই শোকের। আমরাও সঠিক তদন্ত হোক।’’ শাসকদলের বিরুদ্ধে একইভাবে চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র।