বৈঠক: মিরিকে দলের কর্মীদের সঙ্গে সৌরভ চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র
চোরাগোপ্তা হুমকি চলছেই। অভিযোগ এমনটাই। ‘ঘর’ সামলাতে তাই ভোট গণনার পরেও মিরিকে ঘাম ঝরাতে হচ্ছে তৃণমূলের ভোট পর্যবেক্ষক আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকে।
শনিবার কলকাতা থেকে ফিরেই মিরিকে গিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে বৈঠকে বসেন সৌরভবাবু। ডেকে নেন পরাজিত প্রার্থীদেরও। ১০ জন যুবককে নিয়ে প্রতিটি ওয়ার্ডে দল গড়ে দিয়েছেন সৌরভ। ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নজরদারির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এঁদের। তবে সরাসরি অভিযোগ না তুলে সৌরভবাবু বলেন,‘‘মিরিকে শান্তি রাখতে হবে। সে কারণেই ভোটের পরেও এখানে আসছি। দলের কর্মীদের কোনও প্ররোচনায় পা দিতে নিষেধ করা হয়েছে।’’
৯ আসনের মিরিক পুরসভায় ৬টি আসন জিতেছে তৃণমূল। জয়ী কাউন্সিলরদের সমতলের ‘গোপন ডেরা’য় রাখা হলেও পাহাড়ে থেকে যাওয়া তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নাগাড়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ। মিরিকের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাইয়ের পরিজনদের শুক্রবার রাতেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি। এই ঘটনায় ৬ মোর্চা সমর্থকের নামে অভিযোগও দায়ের হয়েছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি বলেন, ‘‘হুমকির রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাসী নই। মোর্চা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে।’’
ঘটনার সূত্রপাত গত বুধবার ফল প্রকাশের পরের দিনই। তৃণমূলের এক মহিলা কাউন্সিলরের ভাইকে সৌরিনী বাজারে কয়েকজন মোর্চা সমর্থক হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। এক তরুণ কাউন্সিলরের ভাইকে রাতে বাড়ি থেকে ডেকে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে বলেও ভয় দেখানো হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে লালবাহাদুর রাইয়ের সাত নম্বর ওয়ার্ডে কয়েকটি বাড়িতে ঢুকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় পুলিশ পৌঁছয়। অভিযোগ, পুলিশ চলে যাওয়ার পরে গভীর রাতে ফের মোটরবাইকে চেপে ‘দুষ্কৃতী’রা এসে কয়েকটি বাড়ির সদস্যদের ডেকে ধমকায়।
কেন এই হুমকি তার ব্যাখ্যাও মিলছে শাসক শিবির থেকে। মোর্চার বর্তমানে তিন জন কাউন্সিলর রয়েছে। কোনও ভাবে তৃণমূলের ২ জনের সমর্থন মিললেই তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাবে। সে কারণে কাউন্সিলরদের বাগে পেতে তাঁদের পরিজনদেরই হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূলের এমনই অবস্থা যে কাউন্সিলরদের লুকিয়ে রাখতে হয়।’’