প্রচার থেকে ফেরার পথে গাড়ি ঘিরে ধরে জোট প্রার্থী কেশব রায়কে খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে সিতাই থানার ধুমের খাতা এলাকায়। ঘটনার পরে ক্ষুব্ধ জোট সমর্থকরা কেশববাবুকে নিয়ে সিতাই রাখে তৃণমূলের সশস্ত্র সমর্থকরা। তৃণমূল অবশ্য ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ জানান, অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দু’টি জায়গাতেই পুলিশ পাঠানো হয়। এমসিসি দলের সদস্যরাও সেখানে যান। তিনি বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
সিতাইয়ের বিদায়ী বিধায়ক কেশববাবু জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই সিতাইয়ে সন্ত্রাস তৈরির চেষ্টা হচ্ছে। এ দিন ধুমের খাতায় এক কর্মীর বাড়িতে ঘরোয়া বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। পাশপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়েও প্রচার করছিলেন। প্রচার শেষে তিনি যখন অন্য একটি মিটিঙয়ে যাওয়ার জন্য রওনা হয়েছেন, সেই সময় তৃণমূলের কিছু কর্মী তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন। তাঁকে এলাকায় ঢুকতে নিষেধ করা হয় বলে অভিযোগ। অভিযোগ, ফের এলাকায় ঢুকলে তাঁকে খুন করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। তিনি বলেন, “প্রথমে গালি দেওয়া হচ্ছিল আমাকে। আমি যাতে ওই এলাকায় আর কোনও দিন প্রচারে না যাই, সে জন্য ভয় দেখানো হচ্ছিল। খুন করে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।” তিনি জানান, এর পরে গাড়ি থেকে রাস্তায় নেমে তিনি রুখে দাঁড়ান। সেই সময় ওই কর্মীরা একটু সরে যায়। সেখান থেকেই ফোন করে তিনি বিষয়টি নির্বাচন কমিশন এবং পুলিশকে জানান। পুলিশ সেখানে গেলে শাসক দলের কর্মীরা সরে যায়।
ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা নৃপেন রায় অভিযোগ করেন, এ দিন বিকেলে চামটাতে তাঁদের একটি সভা ছিল, সেই সভা যাতে না হয়, সে জন্য সশস্ত্র অবস্থায় সভাস্থল ঘিরে ভয় দেখাতে শুরু করে শাসক দলের সদস্যরা। এমসিসি দলের সদস্যরা অবশ্য সেখানে গিয়ে শাসক দলের কাউকে খুঁজে পায়নি। ওই মিটিং পরে বাতিল করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া পোস্টার লাগাতে গেলে জোটের দুই কর্মীকে শাসক দলের কর্মীরা মারধর করেন বলেও অভিযোগ। তিনি বলেন, “ভোটে হার নিশ্চিত বুঝে এখন সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছেন শাসক দলের কর্মীরা। সে জন্যই এমন ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আমরা যাতে নিরাপদে সভা করতে পারি, সে ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন করবে বলে আমরা আশাবাদী।”
তৃণমূলের ওই কেন্দ্রের প্রার্থী জগদীশ বসুনিয়া অবশ্য ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, পাঁচ বছর বিধায়ক ছিলেন কেশব রায়। ভোটের আগে তিনি নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এর পরে কোনওদিন আর এলাকায় তাঁকে দেখা যায়নি। তা নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। তিনি বলেন, “এত দিন তিনি কেন এলাকায় যাননি, তা নিয়ে স্থানীয় কিছু বাসিন্দা তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিল। তৃণমূলের কর্মীরা তাঁকে হুমকি দেয়নি। আসলে মিটিঙয়ে মিটিঙয়ে লোক না পেয়ে মিথ্যে অভিযোগ করে চমক তৈরির চেষ্টা করছেন কেশববাবু।”