পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারী। —নিজস্ব চিত্র।
এসএসসি নিয়োগ মামলায় কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে চাকরি গিয়েছিল রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী পরেশচন্দ্র অধিকারীর মেয়ে অঙ্কিতা অধিকারীর। সেই অঙ্কিতাকে এ বার দলীয় পদ দিল শাসকদল তৃণমূল। তাঁকে জেলা সম্পাদক করা হল। শনিবার কোচবিহারে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে এ কথা জানান দলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক। এ নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিজেপি। তাদের বক্তব্য, তৃণমূল যে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেয়, এই সিদ্ধান্তই তার প্রমাণ। ওই দলে যে যত দুর্নীতিগ্রস্ত, সে তত ভাল পদ পায়।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় অঙ্কিতার নাম আদালতে প্রথম ওঠে ২০২২ সালের ১৭ মে। অভিযোগ ওঠে, রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষিকা পদে তাঁর নিয়োগ বেআইনি। এর পরেই অঙ্কিতা এবং তাঁর পিতা পরেশকে সিবিআই দফতরে হাজিরার নির্দেশ দেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (তিনি এখন তমলুকের বিজেপি সাংসদ)। সেই মতো কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বাসিন্দা পরেশ এবং অঙ্কিতা কলকাতায় আসার জন্য ট্রেনেও চেপেছিলেন। কিন্তু তাঁরা কলকাতায় পৌঁছননি ওই দিন। ‘উধাও’ হয়ে গিয়েছিলেন! পরে জানা যায়, তাঁরা বর্ধমানে পৌঁছে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য দু’জনকেই সিবিআইয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। ওই বছরের ২০ মে চাকরি যায় অঙ্কিতার। নিয়োগ মামলায় নাম জড়ানোর পর পরেশকেও মন্ত্রিপদ থেকে সরানো হয়।
তৃণমূল সূত্রে খবর, এক সময়ে যে পরেশ ও অঙ্কিতার জন্য অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। কিন্তু পরবর্তী কালে পিতা ও কন্যা দলের হয়ে ভাল কাজ করেছেন। সেই কারণেই অঙ্কিতাকে পদ দেওয়া হয়েছে। নতুন দায়িত্ব পেয়ে অঙ্কিতা বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সুষ্ঠু ভাবে যাতে দল পরিচালনা করা যায়, আমি সেই চেষ্টা করব।’’ জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন, ‘‘গত নির্বাচনে মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে পরেশ অধিকারী এবং অঙ্কিতা অধিকারী ভাল কাজ করেছেন। সেই বিধানসভায় তৃণমূল জয়লাভ করেছিল। এই জয়ের ফলে আমরা আনন্দিত। তাই অঙ্কিত অধিকারীকে জেলার সম্পাদিকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’
এ বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজেন্দ্র বসু বলেন, ‘‘অঙ্কিতা অধিকারী এবং পরেশ অধিকারীর নাম শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআইয়ের চারশিটে আছে। তৃণমূল অঙ্কিতা অধিকারীকে সম্পাদিকার দায়িত্ব দিয়েছে। এর থেকে বোঝা যায়, তৃণমূল কতটা দুর্নীতিগ্রস্ত। আসলে তৃণমূলে যে যত দুর্নীতিগ্রস্ত, সে তত ভাল পোস্ট পায়।’’