—প্রতীকী ছবি
কার্বাইনের পর রিভলভার! শাসক দলের নেতার পাশে বসা এক যুবকের আগ্নেয়াস্ত্র হাতে ছবি ঘিরে ফের তোলপাড় কোচবিহার।
কার্বাইন হাতে ছবি দিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বড় আটিয়াবাড়ি ২ পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী নরেশ দেবনাথ। পরে তিনি গ্রেফতার হন। সেই রেশ কাটতে না কাটতেই দিনহাটার আরও এক তৃণমূল নেতার পাশে রিভলবার হাতে নিয়ে বসে থাকা এক যুবকের ছবি ছড়াল সোশ্যাল মিডিয়ায়। দিনহাটা ২ ব্লকের আবুতারা এলাকার ওই তৃণমূল নেতার নাম আলতাফ মিয়াঁ। ছবিতে দেখা যাচ্ছে ওই ব্লকের যুব তৃণমূলের আহ্বায়ক আলতাফ স্যান্ডো গেঞ্জি ও প্যান্ট পরে চেয়ারে বসে আছেন। পাশের চেয়ারে জিন্স ও লাল গেঞ্জি পরা এক যুবকের হাতে অত্যাধুনিক রিভলভার। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই রিভলবারটি নাইন এমএম হতে পারে। কী ভাবে রিভলভার হাতে ওই যুবক আপনার পাশে এল? আলতাফের জবাব, ‘‘আমি মিটিং করতে অনেক জায়গায় যাই। কোথায় এই ঘটনা হয়েছে আমার মনে পড়ছে না।’’ তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমাকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আমি নিজেই ছবিটি নিয়ে পুলিশের কাছে যাব। পুলিশ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিক।’’
বামেরা ক্ষমতায় থাকাকালীন সিপিএম করতেন আলতাফ। ২০০৩-০৮ সালে আবুতারা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানও ছিলেন তিনি। রাজ্যে ক্ষমতার পালাবদলের পর তৃণমূলে যোগ দেন আলতাফ। বিধায়ক উদয়ন গুহের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ওই নেতা বর্তমানে যুব তৃণমূল শিবিরেরও কাছাকাছি এসেছেন বলে দল সূত্রে খবর। ৬ নভেম্বর দিনহাটা ২ ব্লকে প্রগতি সঙ্ঘের পরিচালনায় কালীপুজো উপলক্ষে বস্ত্রদান অনুষ্ঠানে দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ, কোচবিহারের সাংসদ তথা তৃণমূল যুবর কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়, যুব সংগঠনের কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিকের সঙ্গে একমঞ্চে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সেই আলতাফের নাম এমন ঘটনায় জড়ানোয় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতারা।
দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, “যার হাতে ওই অস্ত্র দেখা যাচ্ছে তাকে পুলিশ খুঁজে বের করুক । ছবিটিও দেখেছি। রিভলবার তো আলতাফের হাতে ছিল না।” তাঁর আশঙ্কা, সুপারইম্পোজ করেও ছবিটি ছড়ানো হয়ে থাকতে পারে। সেটাও পুলিশ পুলিশ তদন্ত করে দেখুক। সাংসদ তথা যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তৃণমূল যুবর কোচবিহার জেলা সাধারণ সম্পাদক নিশীথ প্রামাণিক বলেন, “বেআইনি অস্ত্র থাকলে তা উদ্ধার করা উচিত। ওই ছবি সুপারইম্পোজ করা কি না, সেটাও তদন্ত করে দেখা উচিত।”
বিষয়টি নিয়ে দিনহাটার এসডিপিও উমেশ জি গণপথ বলেন, ঘটনার তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এর আগে কার্বাইন হাতে ফেসবুকে ছবি ছড়িয়ে পড়ার পরে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে। অভিযুক্ত নরেশ দেবনাথকেও পুলিশ গ্রেফতার করে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও সম্প্রতি কোচবিহারে প্রশাসনিক সভায় যোগ দিতে এসে দিনহাটার আইসির কাছে আইনশৃঙ্খলা নিয়ে খোঁজখবর নেন। এই ঘটনার পরে তাই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, আগেও বেশ কিছু বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সর্বত্র নজরদারি রয়েছে।