দেখা: সোমবার গৌতম দেবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন বিনয় তামাং। নিজস্ব চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরে তৃণমূলের জন্য গোর্খা এবং নেপালি ভাষাভাষী অধ্যুষিত এলাকায় পুরভোটে প্রচারে নামবেন বিনয় তামাং। ভোটের মুখে গত সপ্তাহেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন বিনয়। সোমবার সকালে শিলিগুড়ি পুরসভায় গিয়ে পুর প্রশাসক গৌতম দেবের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন কার্শিয়াঙের দু’বারের বিধায়ক রোহিত শর্মাও। প্রার্থীপদ ঘোষণার পর তাঁরা শহরের কিছু নির্দিষ্ট এলাকায় প্রচারে আসবেন বলে ঠিক হয়েছে। পুরসভার পর জেলা দফতরে জেলা সভানেত্রীর সঙ্গে বৈঠকের কথা ছিল বিনয়দের। কিন্তু এ দিন সেই বৈঠক হয়নি। ৩০ ডিসেম্বর নাগাদ পাহাড়ের নেতারা সমতলের ভোট নিয়ে জেলা অফিসে আলোচনায় বসবেন বলে ঠিক হয়েছে।
বিনয় বলেন, ‘‘আমি তৃণমূলের কর্মী। শিলিগুড়ি পুরসভায় আমাদের প্রার্থীদের জেতাতে হবে। গোর্খারা আছেন, সেই সব এলাকায় আমরা প্রচারের কাজ করব। কিছু বৈঠক, আলোচনা সভা হবে।’’ আর গৌতমের কথায়, ‘‘বিনয়ের সঙ্গে সাংগঠনিক কথা হয়েছে। ভোটে ওরা তো দলের হয়ে কাজ করবেনই।’’
দলীয় সূত্রের খবর, শিলিগুড়ি শহরের ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে সেবক রোডের একাংশ, গুরুংবস্তি, প্রধাননগর, চম্পাসারি, মাল্লাগুড়ি, জংশন, ভানুনগর, দুই মাইল এলাকায় নেপালি ভোটারের সংখ্যা ভাল। প্রতিবার শহরের পুরসভা বা বিধানভোটে পাহাড়ের নেতারা এসে পছন্দসই দলের হয়ে প্রচার করে থাকে। একসময় সুবাস ঘিসিংয়ের পর বিমল গুরুংরাও এমন প্রচার করেছেন। এখন শাসক দলের পাশে আছেন গুরুং এবং অনীত থাপা। আর বিনয় সরাসরি তৃণমূলে। তাই সমতলের গোর্খা ভোটারদের সমর্থন শাসক দলের দিকে অনেকটাই থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু গত লোকসভা, বিধানসভায় পাহাড়িদের অনেকেই বিজেপির পক্ষে ভোট দিয়েছেন। পদ্মফুলের বদলে তাঁদের ঘাসফুলে আনার কাজ তাই তৃণমূল পাহাড়ের নেতাদের দিয়ে করাচ্ছে বলে খবর।
দলের নেতারা জানান, ৮০ দশকে বামফ্রন্টের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলত জিএনএলএফ। সেই সুবাদ সমতলে নেপালি ভোটারদের বড় অংশই সিপিএম বা ফ্রন্টকে ভোট দিত। ২০০৭ সালে বিমল গুরুং-র উত্থানের পর মোর্চার সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক তৈরি হয়। এর সুফল বিজেপি সমতলের ভোটে পেয়েছে। এবারই প্রথমবার পাহাড়ের মুখ তিন নেতাই আলাদা আলাদাভাবে শাসক শিবিরের সঙ্গে আছেন। দলের তরফে সমতলে তাঁদের সাহায্য নেওয়ার কথা ঠিক হয়ে রয়েছে। বিশেষ করে, সমতলের ভোটার অধিকাংশ নেপালি মানুষদের পাহাড়ের যোগ থাকে। সেখান অনেকেরই আদি বাড়ি, পরিবারের সদস্য, আত্মীয়েরা থাকেন। তাই পাহাড়ের রাজনৈতিক নেতাদের এদের মধ্যে যথেষ্টই প্রভাব থাকে। সেই প্রভাবকে এবার পুরভোটে শিলিগুড়িতে ব্যবহার করতে চাইছে তৃণমূল।