শনিবার আলিপুরদুয়ারের থেকে তাঁর আশ্বাস, যে ভাবে ১০০ দিনের কাজের বকেয়ার জন্য আন্দোলন করছেন, তেমনই চা-শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্য পাশে থাকবেন। —ফাইল চিত্র।
দীর্ঘ দিন ধরে উত্তরবঙ্গের চা-শ্রমিকেরা ‘প্রভিডেন্ট ফান্ড’ (পিএফ)-এর দাবিতে আন্দোলন করছেন। এ বার তাঁদের দাবিকে খোলাখুলি সমর্থন জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার আলিপুরদুয়ারের বাবুরহাট মাঠ থেকে তাঁর আশ্বাস, যে ভাবে ১০০ দিনের কাজের বকেয়ার জন্য আন্দোলন করছেন, তেমনই চা-শ্রমিকদের দাবি আদায়ের জন্যও তাঁদের পাশে থাকবেন। পাশাপাশি জানালেন আবার জুলাই মাসে উত্তরবঙ্গে আসবেন। ৫০ হাজার লোক নিয়ে জলপাইগুড়ির পিএফ অফিস ঘেরাও অভিযান করবেন।
উত্তরবঙ্গ জেলাগুলির উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে নানা খতিয়ান তুলে ধরেন অভিষেক। বলেন, তিনি নিজে উত্তরবঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গ বলে বাংলাকে ভাগ করেন না। তিনি এ রাজ্যকে পশ্চিমবঙ্গ বলেই জানেন। অভিষেকের দাবি, গত বিধানসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়িতে তৃণমূল আশাতীত ফল করেনি ঠিকই। কিন্তু তার জন্য ওই জেলাগুলোর মানুষকে সরকার বঞ্চিত করেনি। সর্বত্র সমান উন্নয়ন হয়েছে। এ কথা বলার সময় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কথায় উঠে আসে চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের কথা। জানান, চা-শ্রমিকদের পিএফের দাবি নিয়ে আন্দোলনে পাশে থাকবে তৃণমূল। কেন্দ্রের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়ে অভিষেক বলেন, ‘‘দু’মাস সময় দিচ্ছি। দাবি পূরণ না হলে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আমি আবার আসব। ৫০ হাজার লোক নিয়ে জলপাইগুড়ির পিএফ অফিস ঘেরাও হবে।’’
মাস আটেক আগে উত্তরবঙ্গে এসে মানুষের যে সমস্যা আগে শুনে গিয়েছিলেন, তার সমাধানও হয়ে গিয়েছে বলে জানান অভিষেক। একটি তালিকা পড়তে পড়তে তিনি জানান এক বার দোমোহনিবাজারে গিয়েছিলেন। তখন চাষের সমস্যার কথা শুনেছিলেন। বুঝেছিলেন, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহার নদী দিয়ে ঘেরা হলেও শীতকালে চাষের জন্য জল পান না কৃষকরা। অভিষেকের কথায়, ‘‘সে দিন কলকাতায় গাড়িতে যেতে যেতে ভেবেছিলাম, সত্যি, কথাটা তো ঠিক। এত নদী এই জেলায়, তা হলে চাষের জল কেন পাবেন না? আমি সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে এ ব্যাপারে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে কথা বলি।’’ তালিকা পড়ে অভিষেক জানান, আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম এবং কালচিনির ছ’টি ছোট এবং মাঝারি খাল খননের কাজ শুরু হয়েছিল। চারটির খননের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। বাকিগুলোও হয়ে যাবে। আগামী শীতের মরসুমে ৫০ হাজারের বেশি কৃষক এতে উপকৃত হবেন। পাশাপাশি ‘দিদির দূত’ কর্মসূচিতে মানুষের অভিযোগ এবং সমস্যার যে কথা উঠে এসেছে, তারও আশু সমাধান হচ্ছে বলে জানান তৃণমূল নেতা। বলেন ধূপগুড়ি গ্রামীণ ব্লকে একটি খালের সংস্কারের কাজ হবে। এর ফলে ৫১টি বুথের বাসিন্দারা উপকৃত হবেন। আগামী এক বছরের মধ্যে ওই কাজ শেষ হয়ে যাবে।