জমায়েত: নমশূদ্রদের নিয়ে এক সভায় মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। রবিবার দিনহাটার গোসানিমারিতে। নিজস্ব চিত্র
দলীয় পতাকা হাতে নয়, লিফলেট হাতে বাড়ি বাড়ি পৌঁছবে নমশূদ্রদের একটি দল। কেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনে তাঁরা নিরাপদ নন, লিফলেট হাতে সেটাই বোঝাবেন তাঁরা। বিজেপির ধাঁচে নমশূদ্রদের কাছে টানতে এই ভাবেই মাঠে নেমেছে তৃণমূল। এই অভিযানে রাজ্যের শাসক দলের ‘তুরুপের তাস’ মুকুল বৈরাগ্য।
মুকুল এখন নমশূদ্র উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। দিনকয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে দলের রাজ্য উদ্বাস্তু সেলের চেয়ারম্যানও করেছেন। কয়েক বছর আগে নমশূদ্রদের নিয়ে একটি সংগঠন তৈরি করেন মুকুল। দলীয় সূত্রের খবর, ওই সংগঠনের সদস্য ছাড়াও তৃণমূলের কর্মীরাও প্রচারে নামবেন। এক কোটি লিফলেট তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতে ২০ হাজার সদস্যকে নামানো হবে।
কোচবিহারের গোসানিমারিতে রবিবার একটি সভা করেন মুকুল। সেখানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া এবং তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ছিলেন। মুকুল জানান, রাজ্য জুড়েই তিনি সভা করছেন। শনিবার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির কামরাঙ্গাগুড়িতে সভার মধ্যে দিয়েই সেই পর্ব শুরু হয়েছে। ২২ জানুয়ারি ইসলামপুর, ২৩ জানুয়ারি মালদহ, ৩০ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগণায় সভা করার কথা। কোচবিহারে ৯টি বিধানসভাতেই সভা করবেন তিনি। মুকুল বলেন, “বিজেপি সরকার আমাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা সবাই ভারতীয় নাগরিক। ভোটার কার্ড রয়েছে প্রত্যেকের। এখন বলা হচ্ছে নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে। তাতে সবাই বিদেশি হয়ে যাব। এই আইনের প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না।”
গোটা রাজ্যে বড় সংখ্যায় নমশূদ্র সম্প্রদায়ের বাসিন্দা রয়েছেন, যাঁদের শরণার্থী হিসেবে চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক ‘দড়ি টানাটানি’ শুরু হয়েছে। বিজেপি থেকে সঙ্ঘ পরিবার নমশূদ্রদের নিয়ে সভা করেছে। কোচবিহারের রাস্তায় বিজেপি কর্মী-সমর্থক নমশূদ্রেরা নরেন্দ্র মোদীর সরকারকে সমর্থন জানিয়ে মিছিলও করেছেন। এই অবস্থায় পাল্টা হিসেবে মুকুল বৈরাগ্যকে সামনে রেখেই ময়দানে নেমেছে তৃণমূল। এ দিন থেকে শুরু হয়েছে লিফলেট বিলিও। লিফলেটে নতুন নাগরিকত্ব আইনের যুক্তি ও বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। বিজেপির কোচবিহার জেলার সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “তৃণমূল সিএএ নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে। তাতে কোনও লাভ নেই। নমশূদ্রদের কেউই তৃণমূলের সঙ্গে নেই। তাই এসব প্রচার করে লাভ হবে না।”