তৃণমূলের মিষ্টি বিলি। — নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক আদালতে হাজির হওয়ার ঘটনায় নিজেদের সাফল্য দেখছে তৃণমূল। মঙ্গলবার কোচবিহারে শহর জুড়ে মিষ্টিও বিলি করেন জোড়াফুল শিবিরের নেতাকর্মীরা। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ার আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের ডেপুটি। এই আবহে ‘উদ্যাপন’ করার ছবিই মঙ্গলবার দেখা গিয়েছে কোচবিহারে। তৃণমূলের যুক্তি, নিশীথের বিরুদ্ধে থাকা পুরনো মামলায় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলে পথে নেমেছিল তারা। তাঁদের দাবি, তৃণমূলের চাপেই আদালতে হাজির হতে বাধ্য হয়েছেন নিশীথ। যদিও, তৃণমূলের এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি।
২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ারে দু’টি সোনার দোকানে চুরির ঘটনায় নাম জড়ায় নিশীথের। ২০১৯ সালে তিনি সাংসদ হওয়ার পর ওই মামলাটি বারাসাতের এমপি আদালতে স্থানান্তরিত হয়। পরবর্তী কালে অবশ্য নিশীথের আবেদনের ভিত্তিতে ওই মামলাটি আবার আলিপুরদুয়ার আদালতের নিম্ন আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। কিন্তু ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় রাজনৈতিক মহলে। ওই ঘটনাকে সামনে রেখে নিশীথের জেলা কোচবিহার জুড়ে আন্দোলনে নামে তৃণমূল। মঙ্গলবার নিশীথ আদালতে হাজির হওয়ায় পর কোচবিহারের কাছারি মোড় এলাকায় সাধারণ মানুষকে মিষ্টি মুখ করান তৃণমূল কর্মীরা। এ নিয়ে তৃণমূলের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক বলেন,‘‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন ২০০৯ সালে আলিপুরদুয়ারের একটি সোনার দোকানের চুরির মামলায়। নিশীথের গ্রেফতার এবং পদত্যাগের দাবিতে কোচবিহার জেলা তৃণমূল এক হাজার কিলোমিটারের পদযাত্রার কর্মসূচি গ্রহণ করে। অবশেষে উচ্চ আদালতের নির্দেশে আজ আলিপুর আদালতে হাজির হতে বাধ্য হন নিশীথ প্রামাণিক। এটা আমাদের কোচবিহারবাসীর প্রতিবাদের নৈতিক জয়। সেই কারণে আজ আমরা সাধারণ মানুষকে মিষ্টিমুখ করালাম।’’
এ নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করতেও ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির কোচবিহার জেলার সম্পাদক বিরাজ বোস বলেন, ‘‘ভারতবর্ষে গণতন্ত্র আছে। কেউ কোথাও মামলা করলে আইনি প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে হয়। সেটা তৃণমূলের জানা নেই। বিচার ব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এটা ঢেড়া পেটানো বা মিষ্টি খাওয়ার মতো বিষয় নয়। এ সব করে জনসাধারণের কাছে নিজেরাই হাস্যকর হয়ে উঠছে।’’
২০০৯ সালে নিশীথের বিরুদ্ধে যখন অভিযোগ দায়ের হয়েছিল তখন রাজ্যে বাম আমল। এই প্রসঙ্গে মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারে সিপিআমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘আজকে অমিত শাহের পরবর্তী হিসাবে এমন এক জনকে মন্ত্রী করা হয়েছে যিনি এক জন অপরাধী। আসলে বিজেপি এবং তৃণমূলে এমন সব নেতারাই ভিড় করেছেন যাঁদের স্থান অপরাধ জগতে।’’