নির্বাচনের পরে একের পর এক গন্ডগোলের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল ইসলামপুর। কংগ্রেসের অভিযোগ রবিবার রাতে ভোট শেষ হওয়ার পরে তৃণমূলের কর্মীরা তাঁদের কয়েকজন সদস্যকে মারধর করেছে। তাতে আহত হয়ে তাদের এক কর্মী ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। সোমবার দুপুরে তৃণমূলের ৩৫ জনের নামে ইসলামপুর থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে আহত যুবকের পরিবারের লোকেরা। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, তাদের এক স্থানীয় নেতার উপরে হামলা হয়েছে। কংগ্রেস অবশ্য বলেছে, ওই নেতা ও তাঁর দলবল ভোটে হেরে যাবেন বুঝতে পেরে এলাকা উত্তপ্ত করতে চাইছেন।
রবিবার রাতের পণ্ডিতপোতার টালিঘরের পরে সোমবার সকালে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান সাবির আলমের বাড়িতে ঢুকে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ওই প্রধানের বাড়ি পন্ডিতপোতা ১ পঞ্চায়েতের বোধাবস্তি এলাকাতে। অভিযোগ, এদিন প্রধান বাড়ি ফেরার পথে হটাৎই হামলা হয়। তিনি ও তাঁর পরিবারের লোকেরা ঘরে ঢুকে গেলে তাঁদের বাড়ি ও তাঁর জামাইয়ের গাড়িতে হামলা চালানো হয়। কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালায় হামলাকারীরা। ঘটনার খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে হামলার বিষয়টি অস্বীকার করেছে পুলিশ। ইসলামপুরের এসডিপিও বৈভব তেওয়ারি বলেন, ‘‘গন্ডগোলের খবর পেয়ে এলাকাতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে. এখনও পর্যন্ত ৫ জনকে জিঞ্জাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।’’
তৃণমূলের প্রধান সাবির আলম জানান, বাড়ি ফেরার সময় তাঁর নজরে আসে ১৪-১৫ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তাঁর বাড়ির দিকে আসছে। দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকেই কংগ্রেসের সমর্থক। হটাৎই তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। তাদের এক জনের হাতে পিস্তলও ছিল বলে অভিযোগ। সেই সময় বাড়িতে রেশন দোকানে ছিলেন তাঁর ছেলে। দুষ্কৃতীরা ছুটে আসছে দেখে তাঁর ছেলে তাঁকে ঘরে নিয়ে যান।
সাবির বলেন, ‘‘যারা হামলা চালিয়েছে তাদের মধ্যে এক জন রাজগঞ্জে ডাকাতি ও খুনের অভিযোগে এর আগে গ্রেফতার হয়েছিল। এখন জামিনে মুক্তি পেয়ে কংগ্রেসের হয়ে এলাকাতে দাদাগিরি করছে। তার সঙ্গে এলাকার কংগ্রেস কর্মীরাই ছিল।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার কারণে এলাকাতে তৃণমূলের অস্তিত্ব নষ্ট করতে পারছে না। সেই কারণে আমার উপর হামলা চালিয়েছিল তারা। প্রাণে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যেই এসেছিল বলে আমার মনে হয়।’’ তবে কংগ্রেসের ইসলামপুর ব্লক সভাপতি জাকির হুসেন বলেন, ‘‘আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। বিধানসভায় তৃণমূলের প্রার্থী হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় ও এলাকার পঞ্চায়েত হারানোর ভয়েই উল্টে শাসক দলই এলাকা উত্তপ্ত করছে।’’
তৃণমূলের আরও অভিযোগ, রবিবার রাতে ভোট শেষের পরেও তাদের কয়েকজন কর্মীকে ব্যাপক মারধর করে কংগ্রেসের কর্মীরা। ইসলামপুর থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে তৃণমূলের সদস্যরা। তবে পুরো বিষয়টি ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন কংগ্রেস। তাদের দাবি, রবিবার রাতে তাদেরই কর্মীদের মারধর করেছে তৃণমূল কর্মীরা।