গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভাগে গিয়ে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলছেন উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।
শুক্রবার দুপুর ১২টা। গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদর দরজায় দাঁড়িয়ে মহিলা-পুরুষ নিরাপত্তা রক্ষীরা। পরিচয়পত্র খুঁটিয়ে দেখে, ছাত্রছাত্রীদের ক্যাম্পাসে ঢোকার অনুমতি দিচ্ছিলেন তাঁরা। আর প্রাক্তনীদের নাম রেজিস্ট্রারে নথিভুক্ত করা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলার পরেই প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ভবনে গণিত স্নাতকোত্তর দ্বিতীয় সিমেস্টারের ছাত্রী তনুশ্রী চক্রবর্তীকে ছুরিকাহত করার পরে বিশ্ববিদ্যালয়েরই প্রাক্তনী অলোক মণ্ডলের আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টার ঘটনার পরে এখন এটাই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ছবি।
এ দিনও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা ছিল। ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে এলেও তাঁদের চোখেমুখে আতঙ্কের ছাপ দেখা গিয়েছে। ক্লাসে গিয়ে তাঁদের অভয় দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পবিত্র চট্টোপাধ্যায়, দায়িত্বপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাস এবং অন্যান্য আধিকারিকেরা। উপাচার্য বলেন, ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য ছাত্রছাত্রীদের পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীদের একা ক্যাম্পাসে ঘুরতে নিষেধ করা হয়েছে এবং নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এ দিন দুপুরে পরীক্ষা দিতে আসা পড়ুয়ারা শিক্ষকদের কাছে তনুশ্রীর খোঁজ নেন। অঙ্কের দ্বিতীয় সিমেস্টারের এক ছাত্র বলেন, ‘‘তনুশ্রীর উপর হামলার ২৪ ঘণ্টা আগেও বিজ্ঞান ভবনে এসেছিলেন অলোক। তনুশ্রীর সঙ্গে ওঁর কথা কাটাকাটি হয়। অলোক প্রায়ই আসতেন। অনেক সময় তনুশ্রীর সঙ্গেও এসেছেন।’’ সহপাঠী পড়ুয়ারা জানান, তনুশ্রী কম কথা বলেন। তনুশ্রীর এক বান্ধবী বলেন, ‘‘অলোক একটুতেই রেগে যেতেন। তাই তনুশ্রীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। রাস্তাঘাটে তনুশ্রীকে বিরক্তও করতেন অলোক। তবে ছুরি নিয়ে হামলা হবে, ভাবতে পারিনি!’’
তনুশ্রীর মতো অলোকও খুব চাপা স্বভাবের বলে দাবি তাঁর পরিচিতদের। দাবি, ২০২১ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হওয়ার পরে, অলোক প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়মিত আসতেন না। সম্প্রতি নিয়মিত আসতে শুরু করেন। এক ছাত্রের দাবি, ‘‘অঙ্কের এক ছাত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে ছিল বলে জানালেও, তার বেশি কখনও মুখ খোলেননি অলোক।’’